ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ইবিতে ধর্মঘট প্রত্যাহার, শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ

প্রকাশিত: ০৪:৫৩, ৩ ডিসেম্বর ২০১৪

ইবিতে ধর্মঘট প্রত্যাহার, শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ

ইবি সংবাদদাতা ॥ কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি বিভাগের ছাত্র টিটু হত্যার জের ধরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার আবাসিক হল ছেড়েছে শিক্ষার্থীরা। তবে ক্যাম্পাসের আবাসিক হল এবং একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও খোলা থাকছে বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপ্তরিক কার্যক্রম। হল খোলা এবং বন্ধ নিয়ে দিধাদ্বন্দ্ব থাকায় বেলা ১১টার মধ্যে হলত্যাগের নির্দেশ থাকলেও শিক্ষার্থীরা একঘণ্টা বিলম্বে দুপুর ১২টার দিকে হল ত্যাগ করেছে। এদিকে আবাসিক হল বন্ধ রেখে দাপ্তরিক কার্যক্রম চালু রাখায় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন মহল চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। জানা গেছে, রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাড়া করা একটি বাসের চাপায় বিশ্ববিদ্যালয়েরই বায়োটেকনোলজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র টিটু নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাংচুর ও বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার সকাল ১০টায় শিক্ষার্থীদেরকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু বাসে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের ঘটনার প্রতিবাদে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহের পরিবহন মালিক সমিতির ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ফলে অধিকাংশ শিক্ষার্থীই ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে পারেনি। কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই যেসব শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যায় তাদের পথের মধ্যে পরিবহন সমিতির শ্রমিকরা বিভিন্নভাবে হয়রানি করে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, মোবাইল ফোন, লাপটপ, মানিব্যাগ কেড়ে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। কিছু মেয়েদের শ্লীলতাহানীও করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে সোমবার রাত ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, পরিবহন মালিক সমিতি, স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের এক বৈঠকে উভয় জেলার পরিবহন মালিক সমিতিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিলে তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন। সভাশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম সরকার মঙ্গলবার সকাল ১১টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল ছাড়ার নির্দেশ দেন। এ সময় তিনি বুধবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপ্তরিক কার্যক্রম খোলা থাকবে বলেও জানান। তবে হল বন্ধ করে আবাসিক হল খোলা রাখায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন মহল থেকে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। তারা বলেছে, সামনে ভর্তি পরীক্ষায় হল খোলা না থাকলে দেশের বিভন্ন স্থান থেকে আসা শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়বে। যদি খোলা রাখতে হয় তবে প্রশাসনিক এবং আবাসিক হল সবই খোলা থাকবে আর যদি বন্ধ করতে হয় তবে সবই বন্ধ থাকবে। এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল হাকিম সরকার বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিকে অতিদ্রুত স্বাভাবিক করতে আমরা আপাতত দাপ্তরিক কার্যক্রম চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর যেহেতু আমাদের বিপুল পরিমাণে পরিবহন নষ্ট হয়েছে তাই এই সেক্টরে কিছুটা রিকভার করে হলগুলো খুলে দেয়ার চিন্তা করছি। আশা করি খুব দ্রুত সমাধান হবে। পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার ॥ বিডিনিউজ জানায়, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নিহতের পর ৩০টি বাস পুড়িয়ে দেয়ার প্রতিবাদে ডাকা পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছে পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো। সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এক বৈঠকের পর বাস মালিক সমিতি, মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন, ট্রাক মালিক সমিতি, ট্রাক-ট্যাংক লরি শ্রমিকসহ পাঁচটি সংগঠন কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কে ডাকা অনির্দিষ্টকালের এ পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। ওই বৈঠকের পর মঙ্গলবার বেলা ১১টার মধ্যে শিক্ষার্থীর হলত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয় বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল হাকিম সরকার জানান। বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের তা-বের পর গত রবিবার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়ে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে বলা হলেও পরিবহন ধর্মঘট ও সড়কে শ্রমিকদের অবস্থানের কারণে নিরাপত্তার অভাবে ছাত্রছাত্রীরা হল ছাড়তে পারছিল না।
×