ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

অনন্যা সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হলেন জাহানারা নওশিন

প্রকাশিত: ০৪:৪৮, ৩ ডিসেম্বর ২০১৪

অনন্যা সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হলেন জাহানারা নওশিন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার ১৪২১’ পেলেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক জাহানারা নওশিন। মঙ্গলবার হেমন্তের বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই কথাশিল্পীর হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন কবি আসাদ চৌধুরী ও কবি শামীম আজাদ। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দেশবরেণ্য অনেক কবি ও কথাসাহিত্যিক। সভাপতিত্ব করেন পাক্ষিক অনন্যার সম্পাদক ও দৈনিক ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাসমিমা হোসেন। সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন কথাসাহিত্যিক ঝর্ণা রহমান। আয়োজনের শুরুতেই স্মরণ করা হয় তিন বরেণ্য ব্যক্তিত্বকে। চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী, শিক্ষাবিদ ও কবি অধ্যাপক জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী এবং সাংবাদিক জগলুল আহমেদ চৌধুরীকে শ্রদ্ধা জানিয়ে পালন করা হয় এক মিনিটের নীরবতা। এরপর স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন পাঁচ তরুণ কবি। পুরস্কারপ্রাপ্তির প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জাহানারা নওশিন বলেন, আমি মনে করি এই পুরস্কারের মধ্য দিয়ে আমার কাজের মূল্যায়ন হয়েছে। আর নিজের কাজের মূল্যায়ন হলে কার না ভাল লাগে! তাই আমারও ভীষণ ভাল লাগছে। প্রধান অথিতির বক্তব্যে সৈয়দ শামসুল হক বলেন, অনন্যা নামেই বোঝা যায় এটি আর সকলের চেয়ে আলাদা। অনন্যা যেন নিজেকে বলে আমি দশজনের মধ্যে নই। আমি একাদশতম। জাহানারা নওশিনকে পুরস্কারপ্রাপ্তির অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ১৪০১ বঙ্গাব্দ থেকে এ পর্যন্ত ধারবাহিকভাবে যাঁরা এ পুরস্কার পেয়েছেন তাঁরা প্রত্যেকেই আমাদের সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। অনন্যা প্রায় উপেক্ষিত ও আড়ালে থাকাদের সামনে এনে পুরস্কার দিয়ে সম্মাননা জানিয়ে আসছে। অনন্যা সাহিত্য পুরস্কারটি শুধু দেশের নারী সাহিত্যিকদের দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে মজা করে তিনি বলেন, এই পুরস্কারটি কেবল নারীদের দেয়ায় আমরা উপেক্ষিত হয়ে থাকছি। বিশেষ অথিতির ভাষণে কবি আসাদ চৌধুরী বলেন, জাহানারা নওশিন বিনয় করে বললেন তিনি লেখা প্রকাশ করতে লজ্জা পেতেন। তিনি আসলে নিজেকে তৈরি করেছেন। গদ্যের ডিটেলিং কিংবা প্রকৃতির বর্ণনা এসব ক্ষেত্রে তিনি অনেকের থেকে আলাদা। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শামীম আজাদ বলেন, আমরা সাধারণত বলতে ভালবাসি, শুনতে পছন্দ করি না। কিন্তু জাহানারা নওশিন এমন একজন মানুষ যিনি বলার চেয়ে শোনাকেই বেশি গুরুত্ব দেন। সভাপতির ভাষণে তাসমিমা হোসেন বলেন, প্রতিবছরই একজন বিশেষ নারীকে এই সম্মাননা দিতে পেরে আমি আনন্দিত ও গর্বিত। কাল থেকে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসব ॥ কাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য ও মুক্ত চলচ্চিত্র উৎসব। বৈচিত্র্যময় বিষয়ে নির্মিত বিশ্বের ৫০টি দেশের দুই শতাধিক ছবি নিয়ে সাজানো হয়েছে এবারের ১৩তম উৎসব। বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরাম আয়োজিত উৎসবে চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর পাশাপাশি থাকবে আন্তর্জাতিক বক্তৃতা, জাতীয় সেমিনার, চলচ্চিত্র নির্মাণ কর্মশালা ও বিশেষ প্রদর্শনী। আটদিনের এ উৎসব অনুষ্ঠিত হবে রাজধানীর পাঁচটি ভেন্যুতে। মূল তিনটি উৎসব কেন্দ্র হচ্ছে জাতীয় জাদুঘর, সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগার ও শিল্পকলা একাডেমি। বাকি দুটি কেন্দ্র হচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও ধানম-ির রাশিয়ান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। উৎসব উপলক্ষে মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান উৎসব পরিচালক তারেক আহমেদ বুলবুল। উপস্থিত ছিলেন উৎসব কমিটির সভাপতি নাসির উদ্দিন ইউসুফ এবং ফোরামের সভাপতি মানজারে হাসীন মুরাদ ও সাধারণ সম্পাদক অনুপম সৈকত। চলচ্চিত্র নির্মাতা ও নাট্য নির্দেশক নাসির উদ্দিন ইউসুফ বলেন, বাংলাদেশের মূল ধারার চলচ্চিত্রে চলছে বেহাল দশা। আমরা চাই সুস্থ ধারায় পরিচালিত হোক মূল ধারার চলচ্চিত্র। এজন্য স্বল্পদৈর্ঘ্য কিংবা মুক্তধারার চলচ্চিত্র নির্মাণের বিকল্প নেই। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় শাহবাগের জাতীয় জাদাদুঘর প্রাঙ্গণে উৎসব উদ্বোধন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থি থাকবেন দেশী-বিদেশী চলচ্চিত্র নির্মাতা ও আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ। একই স্থানে ১১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে পর্দা নামবে উৎসবের। সমাপনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বিজয়ী নির্মাতাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। এবারের উৎসবে মূল অতিথি হিসেবে আসছেন প্রখ্যাত ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা শ্যাম বেনেগাল। এ ছাড়া খ্যাতিমান ভারতীয় চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব মিজ. অরুণা বাসুদেব আলমগীর কবির স্মারক বক্তৃতার বক্তা হিসেবে উৎসবে যোগ দেবেন। জুরি সদস্য হিসেবে উৎসবে যোগ দেবেন শ্রীলঙ্কার প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রসন্ন ভিথানাগে। রাশিয়া থেকে আসবেন চলচ্চিত্র সমালোচক সের্গেই আনাশকিন। প্রতিযোগিতা বিভাগের জুরি প্রধান হিসেবে নেপাল থেকে আসবেন নামী প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা কেসাঙ্গ ট্যেটেন লামা। উৎসবে হীরালাল সেন স্মারক সম্মাননা, আন্তর্জাতিক শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র (ডকুমেন্টারি ও ফিকশন), তারেক শাহরিয়ার বেস্ট ইন্ডিপেনডেন্ট শর্টস ও নেটওয়ার্ক ফর প্রমোশন অব এশিয়ান সিনেমা (নেটপ্যাক) জুরি পুরস্কার দেয়া হবে। গুপ্তযুগের স্বর্ণমুদ্রা বিষয়ক সেমিনার ॥ মঙ্গলবার বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর সভাকক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত গুপ্তযুগের স্বর্ণমুদ্রা বিষয়ক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেমিনারে আনপাবলিশড গুপ্ত গোল্ড কয়েন ইন দ্য বাংলাদেশ ন্যাশনাল মিউজিয়াম শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাদুঘরের কর্মকর্তা মুদ্রা ও লিপি গবেষক ড. মোঃ শরিফুল ইসলাম। তিনি প্র্রবন্ধে গুপ্তযুগে প্রাপ্ত স্বর্ণমুদ্রার সিম্বলিক এবং লিপির নানা দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে ইতিহাসের ধারাবাহিকতা বিশ্লেষণ করেন। প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুল মমিন চৌধুরী ও জাদুঘরের সাবেক মহাপরিচালক ড. এনামুল হক। স্বাগত ভাষণে জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বলেন, নিদর্শন সংগ্রহ, সংরক্ষণের পাশাপাশি জাদুঘর গবেষণার কাজ নিয়মিতভাবে করে আসছে। গবেষণার ফলে বাংলাদেশের গৌরবময় ইতিহাসের নতুন নতুন দিক উন্মোচিত হবে। সেমিনারে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা আবদুল মুঈদ চৌধুরীসহ গণ্যমান্য ব্যক্তি ও গবেষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বাংলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি আজ ॥ বাঙালীর মননের প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমির ৫৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ বুধবার। এ উপলক্ষে একাডেমির পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করে ৫৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচী শুরু হবে। এরপর বিকেল চারটায় একাডেমির রবীন্দ্র চত্বরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশের সাহিত্যের কাছে প্রত্যাশা নিকট অতীতের আলোয় শীর্ষক বক্তৃতা করবেন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক অধ্যাপক যতীন সরকার। সভাপতিত্ব করবেন একাডেমির সভাপতি এমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
×