ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্বাধীনতার ওপর যে কোন সময় হামলা হতে পারে ॥ শঙ্কা আশরাফের

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ২ ডিসেম্বর ২০১৪

স্বাধীনতার ওপর যে কোন সময় হামলা হতে পারে ॥ শঙ্কা আশরাফের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যে কোন সময় আমাদের স্বাধীনতার ওপর হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। রবিবার বিকেলে শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে ‘১ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা দিবসে’র আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি এই আশঙ্কার কথা জানান। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীরা দিনে দিনে শক্তি সঞ্চয় করছে। যারা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, আমাদের সেই শক্তি আস্তে আস্তে ক্ষয়ে যাচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধারা মারা যাচ্ছেন। যারা জীবিত আছেন- আপনাদের দায়িত্ব হলো নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানানো। তাদের কাছে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাঁথা তুলে ধরা। এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় হয়েছে। রায় কার্যকর করাও শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল রায় কার্যকর করা হবে। যত ধরনের হুমকি ধমকিই আসুক না কেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, অনেক শহীদ মুক্তিযোদ্ধার জানাজা দেয়া সম্ভব হয়নি। অথচ রাজধানীতে রাজাকারের জানাজা হয়। আর কোন রাজাকারের জানাজা রাজধানীতে হতে দেয়া হবে না। এছাড়া রাজাকারদের তালিকা করা হবে। নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে কারা স্বাধীনতার সময় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করেছিল। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানী বাহিনীর মাথা নত করার স্মৃতিকে ভুলিয়ে দিতে সেই ঐতিহাসিক স্থানের পাশে জিয়াউর রহমান শিশু পার্ক স্থাপন করে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্য কোথাও এই পার্ক সরিয়ে নেয়া হবে। এখানে করা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর। যা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বাড়ানো ও রেলের ভাড়া কমানোর দাবি জানাতে হবে কেন? আমাদের সরকার তা এমনিতেই করে দেবে। এটা আমাদের প্রত্যাশা। তিনি বলেন, সকল মুক্তিযোদ্ধার কবর একই ধরনের করা হবে। এছাড়া হানাদার বাহিনী যেসব জায়গায় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে সেখানে একটি করে স্মৃতিস্তম্ভ করা হবে। আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানানোর উদ্যোগের অংশ হিসেবে বিসিএস পরীক্ষায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, যে সব প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় না বা জাতীয় সংগীত পাঠ করা হয় না। তা বাংলাদেশে থাকার প্রয়োজন নেই। ১ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা দিবসের দাবির সঙ্গে তিনি একমত উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি আলোচনা করে দিবসটির স্বীকৃতিদানের অনুরোধ করবেন বলেও জানান মন্ত্রী মোজাম্মেল হক। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হেলাল মোর্শেদের (বীর বিক্রম) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন গণজাগরণ মঞ্চের একাংশের সংগঠক ও সমন্বয়ক কামাল পাশা চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. ফজলে আলীম প্রমুখ। এর আগে দুপুরে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করে ন্যাশনাল এফ এফ ফাউন্ডেশন। মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এই র‌্যালির উদ্বোধন করেন। পরে সংগঠনের চেয়ারম্যান ড. এসএম জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে শিখা চিরন্তনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। সকালে আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা লীগ, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ ও মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি বাস্তবায়ন ও মুক্তিযোদ্ধা দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটি র‌্যালি নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
×