ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংবাদ সম্মেলনে নানক

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে উস্কানি দেয়া খালেদার রাষ্ট্রদ্রোহিতা

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ২ ডিসেম্বর ২০১৪

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে উস্কানি দেয়া খালেদার রাষ্ট্রদ্রোহিতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থায় আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর বিরুদ্ধে ‘বিষোদগার’ করে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকা-ে লিপ্ত হয়েছেন, বলে অভিযোগ করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। দলটির অভিযোগ, ক্ষমতা হারিয়ে খালেদা জিয়া উন্মাদনায় ভুগছেন। নিজের অতীত অপকর্ম, দুঃশাসন আড়াল করতে মাত্রারিক্তভাবে অসত্য ও অশোভন বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর এ সব কর্মকা- রাষ্ট্র ও দেশের সার্বভৌমত্বের বিরোধী। সোমবার ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এ সব অভিযোগ করেন যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেন, আসলে খালেদা জিয়া পাঁচটার আগে ঘুম থেকে না উঠতে পারায় বর্তমান সরকারের উন্নয়ন দেখতে পান না। দেশের আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে এবং বিভিন্ন দেশের সংস্থার কাছে বিকৃত তথ্য উপস্থাপন করে খালেদা জিয়া রাষ্ট্রদ্রোহীমূলক কাজ করছেন। মূলত গত ২৯ নবেম্বর কুমিল্লায় খালেদা জিয়ার জনসভায় দেয়া বক্তব্যের জবাব দিতেই এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। লিখিত বক্তব্যে জাহাঙ্গীর কবির নানক খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘নতুন পরিবর্তনের কথা বলে তিনি কি নতুন করে হাওয়া ভবন তৈরির ইঙ্গিত করেছেন? পুনরায় তাঁর কুপুত্র তারেক রহমানকে দুর্নীতির বরপুত্র রূপে বাংলার জনগণের সামনে উপস্থাপন করতে চান? তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া বর্তমান সরকারকে খুনী সরকার বলেছেন। প্রকারান্তরে তিনি নিজেকেই খুনী হিসেবে জাতির সামনে তুলে ধরেছেন। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করার নামে সারাদেশে যে নারকীয় হত্যাকা- তিনি চালিয়েছেন, এমনকি নির্বাচনের দিন নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারসহ সাধারণ জনগণকে যেভাবে হত্যা করেছেন, তাতে সেদিন বেশি দূরে নয় বাংলার জনগণ খালেদা জিয়াকে খুনী হিসেবে কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে। বর্তমান সংসদ ও সরকারকে ‘অবৈধ’ আখ্যায়িত করে খালেদা জিয়ার বক্তব্যের জবাবে নানক বলেন, বেগম খালেদা জিয়া যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি করেন সেটার ফল তো উচ্চ আদালত দিয়েই দিয়েছে। তারপরেও যদি কিছু করতে হয় সেটা এই সংসদের মাধ্যমেই করতে হবে। অথচ তিনি বারবার বলছেন এ সংসদ অবৈধ, এ সংসদে নাকি কোন আইনই পাস করা যাবে না! তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, তাহলে নতুন আইন করে যদি কোন নির্বাচন করতে হয়, তাহলে সেটা কারা তৈরি করবে? কোথায়ই বা সেটা পাস হবে? খালেদা জিয়ার বক্তব্যের সূত্র ধরে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া বলেছেন মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন নাকি তাঁর কাছে গিয়েছিলেন, তাঁকে ক্ষমতায় বসানোর তকমা নিয়ে। এ থেকে বোঝা যায় বাংলার জনগণের প্রতি খালেদা জিয়ার কোন ভরসা নেই। তাঁর ক্ষমতায় যেতে হলে জনগণের ভোটও লাগে না। আর জনগণের আস্থা অর্জন করা খালেদা জিয়ার পক্ষে সম্ভব নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া আন্দোলনের সামনের কাতারে থাকার কথা বললে দেশের জনগণ গত ২৯ ডিসেম্বর জনগণের আস্থাবিহীন কর্মসূচী ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসির কথা’ স্মরণ করে। সেদিন তিনি (খালেদা জিয়া) সারাবাংলার জনগণকে ঢাকা শহরে আমন্ত্রণ জানিয়ে নিজেই ঘর থেকে বের হননি। সম্প্রতি প্রশ্নপত্র ফাঁস প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, যা কিছুই ভাবুন না কেন, বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার দেশের শিক্ষাব্যবস্থাসহ সকল সেক্টরে উন্নয়নের কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং করবে। প্রশ্ন ফাঁসসহ যে কোন বিষয়ে বর্তমান সরকার জিরো টলারেন্সে অবস্থান করে, সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আমরা আশাবাদ ব্যক্ত করছি। সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×