ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চ্যাম্পিয়ন নৌবাহিনীর দাবাড়ুরা সম্মান জানালেন মোহনকে

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ২৭ নভেম্বর ২০১৪

চ্যাম্পিয়ন নৌবাহিনীর দাবাড়ুরা সম্মান জানালেন মোহনকে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অনেক পরিচয় তাঁর। শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেডের ক্রিকেট কর্মকর্তা, দাবা ক্লাব দুরন্ত রাজশাহী ক্লাবের কর্ণধার এবং সর্বপরি একজন নিবেদিত প্রাণ ক্রীড়া সংগঠক। বর্তমানে বাংলাদেশ নৌবাহিনী দাবা ক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা। এই দাবা ক্লাবটি বলা চলে নতুনই। ২০১৩ সালে প্রিমিয়ার বিভাগ দাবা লীগে অংশ নিয়ে রানার্সআপ এবং ২০১৪ সালে একই আসরে অংশ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে তাক লাগিয়ে দেয়। কেননা, ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের টানা তিনবারের শিরোপা জেতার গর্বকে খর্ব করে এবার শিরোপা নিতে নেয় তারা। নৌবাহিনী দাবা দলে ছিলেন দুই গ্র্যান্ডমাস্টারসহ পাঁচ দাবাড়ু। এছাড়া একই আসরে নৌবাহিনী জুনিয়র দাবা দল অংশ নিয়ে চতুর্থ স্থান অধিকার করে। নৌবাহিনী বর্তমানে খেলোয়াড় টানতে তাদের আকষর্ণীয় চাকরি দিচ্ছে। মোহন ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৯ দাবাড়ুর চাকরি দিয়েছেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে। ফলে তাদের দাবাসহ বিভিন্ন খেলায় দলগঠন করে প্রত্যাশিত সাফল্য কুড়িয়ে নিচ্ছে। দলের এই সাফল্যের পেছনে যার ছিল সবচেয়ে বেশি অবদানÑ তিনি মুশফিকুর রহমান মোহন। তিনি নিজেও একসময় ছিলেন দাবাড়ু। তাই দাবার প্রতি স্বভাবতই তাঁর রয়েছে অন্যরকম টান, ভালবাসা। নৌবাহিনী দাবা দল গঠনের শুরুর দিকে তাদের কোন আর্থিক সমস্যা ছিল না, ছিল দক্ষ উপদেষ্টার অভাব। মোহন দায়িত্ব নেয়ার পর সেই সমস্যার সমাধান হয়েছে বেশ ভালভাবেই। দলের শিরোপা জেতার এই নেপথ্য কারিগরকে মোটেও ভুলে যাননি শিরোপাজেতা দাবাড়ুরা। তাঁরা গুলশানে মোহনের অফিসে গিয়ে তাঁকে মিষ্টিমুখ করিয়েছেন। দিয়েছেন উষ্ণ ফুলেল শুভেচ্ছা। দাবাড়ুদের কাছ থেকে এমন শ্রদ্ধা ও ভালবাসা পেয়ে আবেগে অভিভূত, আপুøত, গর্বিত। বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ ফিদেমাস্টার ফাহাদ রহমানের আর্থিক কারণে দাবা অনুশীলন করতে সমস্যা হতো। মোহন ফাহাদকে অনুশীলন করার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু দিয়ে সাহায্য করেছেন। এছাড়া দাবাড়ুদের বিপদের দিনে সবসময়ই ছিলেন, আছেন এখনও। অনেক ক্রীড়া সংগঠক আছেন, যারা বিভিন্ন খেলায় পৃষ্ঠপোষকতা করলেও দাবায় করেন না, অনীহা প্রকাশ করেন। এক্ষেত্রে মোহন হচ্ছেন ব্যতিক্রম। দাবার ক্ষেত্রে বরাবরই এগিয়ে আসতে পিছু পা হন না তিনি। এ বছরের জুনে আরব আমিরাতের আল-আইনে এশিয়ান ক্লাব কাপ দাবা খেলতে সেখানে যায় নৌবাহিনী দাবা দল। দলের সঙ্গে ছিলেন মোহনও। দাবা ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির কর্মকা- নিয়ে সংবাদমাধ্যমে অতীতে অনেক নেতিবাচক খবর (বিশেষ করে বিদেশে টুর্নামেন্টে খেলতে গেলে) প্রকাশিত হয়েছে, এখনও হচ্ছে। দাবায় সম্পৃক্ত থেকে কেউ এগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেননি। সোচ্চার হননি। একজন করেছেন। তাও নিয়মিতভাবে। তিনি মুশফিকুর রহমান মোহন। ভদ্রলোকের খেলা দাবা। এই খেলাটি আজ অনেকটাই দুর্নীতিগ্রস্ত ও কলুষিত। সম্প্রতি দাবা ফেডারেশনের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন পুলিশ কমিশনার বেনজরী আহমেদ। বেনজীরের অধীনে দাবা কমিটি যেন সঠিক ও স্বচ্ছভাবে কাজ করে, জবাবদিহিতা করে, সঠিক গন্তব্যে পৌঁছতে পারেÑ এমনটাই দৃঢ়বিশ্বাস পোষণ করেন মোহন। বেনজীরের নেতৃত্বে দাবা ফেডারেশন যেন অতীতের বদনাম মুছে ফেলে আলোকময় ভবিষ্যতের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হতে পারে, এমনটা আশা করেন মোহন। তবে দাবা অঙ্গনে যদি আবারও কোন অনিয়ম-দুর্নীতি তাঁর চোখে ধরা পড়ে, তাহলে আবারও তীব্র সোচ্চার ভূমিকায় দেখা যাবে তাঁকে, জানিয়ে দিলেন সেটাও!
×