ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শিল্পকলায় এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী শুরু ১ ডিসেম্বর

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ২৭ নভেম্বর ২০১৪

শিল্পকলায় এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী শুরু ১ ডিসেম্বর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিল্পকলা একাডেমিতে ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে ‘দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী বাংলাদেশ ২০১৪’। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় ১৬ তম এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় চারুকলার ১৬ তম এ বৃহৎ আয়োজনে অংশ নিচ্ছে এশিয়া ও প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশের বিশেষ শিল্পীরা। এদিন বেলা ১১ টায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে মাসব্যাপী এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। সংস্কৃতি সচিব ড. রণজিৎ কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করবেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। এ উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, সচিব ড. রণজিৎ কুমার বিশ্বাস, অতিরিক্ত সচিব মাহবুবা মশকুর, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী ও একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক আনোয়ার হোসেন। সংস্কৃমিন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সহস্রাব্দপ্রাচীন। আমাদের আবহমান এ সংস্কৃতিকে আমরা পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে দিতে চাই। দ্বিবার্ষিক এ চারুকলা প্রদর্শনী একটি আন্তর্জাতিক কার্যক্রম এবং চারুকলা বিষয়ে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ আয়োজন। এর যাত্রা শুরু ১৯৮১ সালে। চারুকলা বিষয়ে পৃথিবীর অন্যান্য আয়োজনের মধ্যেও এটি অন্যতম। এই দ্বিপাক্ষিক প্রদর্শনীতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ অংশগ্রহণ করে এবং এর মাধ্যমে তাদের শিল্প-সংস্কৃতি সম্পর্কে আমরা সম্যক ধারণা পেয়ে থাকি, যা আমাদের শিল্প-সংস্কৃতির উন্নয়ন ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। অন্যদিকে অংশগ্রহণকারী দেশসমূহের শিল্পীগণ আমাদের সমৃদ্ধ শিল্প-সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারে এবং তা স্ব স্ব দেশের জনগণের সামনে উপস্থাপন করতে পারে। এর ফলে আমাদের মধ্যে গড়ে ওঠে এক নিবিড় সাংস্কৃতিক যোগাযোগ, যা দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কোন্নয়নে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমরা মনে করি, এ আয়োজনের মাধ্যমে একটি সংস্কৃতিমনা জাতি হিসেবে আমাদেরকে বিশ্বসভায় তুলে ধরতে পারব এবং এর ফলে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে। প্রদর্শনীর কার্যক্রম উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মোট ৩০টি দেশের শিল্পীরা এ প্রদর্শনীতে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে। দেশগুলোÑআফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, ভুটান, ব্রুনেই, চীন, পূর্ব তিমুর, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইরাক, জাপান, কুয়েত, কাজাখস্তান, লেবানন, মিয়ানমার, নেপাল, ওমান, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন, ফিলিপিন্স, কাতার, দক্ষিণ কোরিয়া, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, সিরিয়া, থাইল্যান্ড, তুরস্ক ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। এসব দেশের ১০৪ শিল্পীর ২০৪ টি শিল্পকর্ম প্রদশনীতে স্থান পাবে। অংশগ্রহণকারী দেশের মধ্য থেকে ৫৫ শিল্পী ও শিল্প সমালোচক এ প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের জন্য ইতোপূর্বে বাংলাদেশের ৫১৮ শিল্পী তাদের শিল্পকর্ম জমা দেন। এসব শিল্পকর্ম থেকে নির্বাচন কমিটি যাচাই-বাছাই করে ২০৯ শিল্পীর ২২৮টি শিল্পকর্ম নির্বাচন করেন, যা এখানে প্রদর্শিত হবে। বাংলাদেশের শিল্পীদের শিল্পকর্ম নির্বাচনের জন্য পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি শিল্পকর্ম নির্বাচন কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা হলেন-শিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী, শিল্পী মনিরুল ইসলাম, শিল্পী সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদ, শিল্পী মনসুর উল করিম ও শিল্পী ড. ফরিদা জামান। প্রথমবারের মতো এবারের প্রদর্শনীতে ‘পারফর্মেন্স আর্ট’ প্রদর্শিত হবে। এতে ১০ শিল্পী আংশগ্রহণ করবেন। এ প্রদর্শনীতে ‘কনটেম্পোরারি নিউ মিডিয়া আর্ট প্র্যাকটিস’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করা হবে। সেমিনারের বিষয়বস্তুও ‘কী নোট পেপার’ উপস্থাপন করবেন শিল্পসমালোচক জিয়াউল করিম এবং এর ওপর আলোচনা করবেন শিল্পী মোস্তফা জামান মিঠু, শিল্পী হাসান আশিক ও শিল্প সমালোচক মাহমুদুল হোসেন। প্রদর্শনী উপলক্ষে বিদেশী জুরির পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে জুরি হিসেবে থাকবেন শিল্পী হাসেম খান ও স্থপতি রবিউল হুসাইন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, মিসর ও ব্রাজিল থেকে পর্যবেক্ষক আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে। প্রদর্শনী উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকেট প্রকাশ করা হবে। উদ্বোধনী দিনে সন্ধ্যায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। প্রদর্শনী চলবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এবং প্রতিদিন বেলা ১১ টা থেকে রাত ৮ টা এবং শুক্রবার বেলা ৩ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। আলীবাবা চল্লিশ চোরের কাহিনী নিয়ে নৃত্যনাট্য ‘বাদীবান্দার রূপকথা’ ॥ আলীবাবা চল্লিশ চোরের কাহিনী নিয়ে প্রথমবারের মতো মঞ্চায়ন হচ্ছে নৃত্যনাট্য ‘বাদীবান্দার রূপকথা’। সৃষ্টি কালচারাল সেন্টারের প্রযোজনায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে আগামী ৫ ও ৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় মঞ্চস্থ হবে নৃত্যনাট্যটি। এর মুখ্য চরিত্র আলীবাবার ভূমিকায় নৃত্যশিল্পী শিবলী মহম্মদ এবং মর্জিনার চরিত্রে রয়েছেন শামীম আরা নিপা। এ উপলক্ষে রিপোর্টার্স ইউনিটে বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে উপস্থিত থেকে নৃত্যনাট্য সম্পর্কে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন নৃত্যশিল্পী শামীম আরা নিপা, শিবলী মহম্মদ, ডলি ইকবাল, সাবরিনা নিসা, আনিসুল ইসলাম হিরু এবং নৃত্যনাট্যের নির্দেশক সুকল্যাণ ভট্টাচার্য। এতে জানানো হয়, কাঠুরিয়া আলীবাবা আর চল্লিশ চোরের গল্প সম্পর্কে অনেকেই অবগত। একে ভিন্ন বিন্যাসে, নতুন আলোকে ও ভঙ্গিতে পরিবেশন ‘বাদীবান্দার রূপকথা’। দেশে এই প্রথমবারের মতো ব্যয়বহুল একটি নৃত্যনাট্য মঞ্চস্থ হতে চলেছে; যাতে থ্রী ডাইমেনশন ম্যাপিং প্রজেকশন, সেট আর প্রপ্সের নতুন মাত্রা যোগ হবে। নৃত্যনাট্যটিতে আবদুল্লাহ ব্যর্থ প্রেমিক। তাঁর আত্মকথার রেশ ধরে আমরা পৌঁছে যাই বাগদাদের বাজারে যেখানে চলছে দাস-দাসির কেনাবেচা। স্বার্থপর কাসেম কেমন করে নিজের ভাইকে পথের ভিখারি করে বানিয়ে দিল কাঠুরিয়া আলী। ডাকাতের গোপন গুহার ধনদৌলত আর লোভী কাসেমের মৃত্যু। মুস্তাফার কেরামতি আর মর্জিনার বাজিমাৎ। গল্পের পরিণতিতে দাসত্বহীন ভালবাসার মিলন। সাহিত্যে মানুষ নিজের অজান্তেই যা খোঁজে তা হলো পোয়েটিক জাস্টিস। আর রূপকথার রাজ্যে তো কোন অবিচার থাকতে পারে না। মানুষের মধ্যে যা অমানবিক, তার লোভ, স্বার্থপরতা, হিংসা সব কিছুকে জয় করে মানুষকে প্রেমিক করে তোলার কাহিনী বলেই এই গল্প চিরদিন সমান জনপ্রিয় থাকবে। নৃত্যনাট্যের অভিনয় শিল্পীরাÑশিবলী মহম্মদ, শামীম আরা নিপা, আনিসুল ইসলাম হিরু, সুকল্যাণ ভট্টাচার্য, ডলি ইকবাল। এতে কণ্ঠ দিয়েছেন-শিল্পী অম্বেষা, ইন্দ্রানী হালদার, শ্রীকান্ত আচার্য, নচিকেতা, লোপা মুদ্রা মিত্র, অরিজিৎ চক্রবর্তী। কোকা-কোলা চ্যানেল আই ব্যান্ডফেস্ট ২০১৪ ॥ প্রথমবারের মতো দেশীয় ব্যান্ডদল নিয়ে শুরু হচ্ছে ‘কোকা-কোলা চ্যানেল আই ব্যান্ডফেস্ট ২০১৪ পাওয়ার্ড বাই সি¤ফনি।’ চ্যানেল আই চত্বরে ১ ডিসেম্বর বেলা ১১ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত এ উৎসব চলবে। কোকা-কোলা এবং চ্যানেল আইয়ের যৌথ এ আয়োজনে বাংলাদেশের ১৬টি ব্যান্ডদল অংশ নিচ্ছে। এ উপলক্ষে চ্যানেল আই ভবনে বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেল হয়। এতে ব্যান্ডফেস্টের এসব তথ্য তুলে ধরেন চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কোকা-কোলা বাংলাদেশের পরিচালক শাদাব আহমেদ খান, সিম্ফনি মোবাইলের পক্ষে এডিসন গ্রুপের উর্ধতন পরিচালক রেজউয়ানুল হক, ব্যান্ড লিজেন্ড আইয়ুব বাচ্চু এবং নবীন ব্যান্ডদলগুলোর পক্ষে চিরকুটের সুমি। শাইখ সিরাজ বলেন, ব্যান্ড মিউজিক নিয়ে প্রথম এই আয়োজনটি তরুণ সমাজকে বিশেষভাবে উৎসাহিত করবে। দেশের সকল ব্যান্ড সদস্য এতে অংশ নিতে পারবেন। চ্যানেল আই অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করবে। শাদাব আহমেদ খান বলেন, সঙ্গীত সর্বজনীন এবং কোকা-কোলাও ঠিক একই রকম। সঙ্গীতের মাধ্যমে আনন্দ উদযাপনে বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রতিভাবান সঙ্গীতশিল্পীদের জন্য একটি অভিন্ন প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে কোকা-কোলা চ্যানেল আই ব্যান্ডফেস্ট ২০১৪। বিশ্বজুড়ে কোকা-কোলার সঙ্গীতের সঙ্গে একটি সুপ্রাচীন সম্পর্ক আছে। আইয়ুব বাচ্চু বলেন, চ্যানেল আইয়ের ১৬তম জন্মদিনের পরদিন তারকাকথন অনুষ্ঠানে আমি অংশ নেই। সেখানে বাংলাদেশের ব্যান্ড মিউজিকের ভবিষ্যত বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে আমি বলেছিলাম ব্যান্ড মিউজিকের জন্য কিছু করেন। চ্যানেল আই আমার আব্দারটা গ্রহণ করেছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অবসকিউরের টিপু, ডিফারেন্ট টার্চের মেসবাহ, চিরকুটের সুমি, বাকের টনি, আর্টসেলের লিংকন, আর্কের হাসান, প্রমিথিউসের বিপ্লব, জলের গানের রাহুল, কনক আদিত্য। ফেস্টিভ্যালে অংশ নিচ্ছে উচ্চারণ, ডিফারেন্ট টার্চ, অবসকিউর, প্রমিথিউস, আর্ক, বে অব বেঙ্গল, তিরন্দাজ, চিরকুট, দলছুট, বাক, আর্টসেল, এল আর বি, শূন্য, রেডিও একটিভ, পার্থিব ও জলের গান ব্যান্ডদল। ব্যান্ডফেস্ট উপস্থাপনা করবেন অপু মাহফুজ এবং পরিচালনা করবেন অনন্যা রুমা ও নির্বাহী প্রযোজক শহিদুল আলম সাচ্চু।
×