ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

৫ বছরে বিদ্যুত জ্বালানি খাতে ব্যয় হবে ২০ বিলিয়ন ডলার

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ২৬ নভেম্বর ২০১৪

৫ বছরে বিদ্যুত জ্বালানি খাতে ব্যয় হবে ২০ বিলিয়ন ডলার

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আগামী ৫ বছরে বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতে ২০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুত ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। তিনি বলেন, এই ২০ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ১০ বিলিয়ন ডলার আসবে বিদেশী সহযোগিতার মাধ্যমে এবং বাকি ১০ বিলিয়ন ডলার আসবে অংশীদারভিত্তিক সরকার ও প্রাইভেট বিভিন্ন কোম্পানির সহযোগিতায়। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘আলোকিত বাংলাদেশ, বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতে অর্জন’ শীর্ষক এক সেমিনারে এ কথা জানান। আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটি ওই সেমিনারের আয়োজন করে। আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুত ও জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই এলাহী চৌধুরী, বিদ্যুত ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম, এফবিসিআইয়ের সহসভাপতি হেলাল উদ্দিন ও এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সদস্য ড. সেলিম রহমান প্রমুখ। সেমিনারের শুরুতেই বিদ্যুত ও জ্বালানিখাতে গত পাঁচ বছরের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সুব্রত কুমার আদিত্য। বিদ্যুত ও গ্যাসের অপচয় এবং দুর্নীতি রোধে শীঘ্রই প্রি-পেইড মিটারে বিদ্যুত ও গ্যাস সরবরাহ করা হবে জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতে দুর্নীতি ও অপচয়রোধে ইতোমধ্যে অনেক এলাকায় প্রি-পেইড মিটার ব্যবস্থায় বিদ্যুত সরবরাহ করা হচ্ছে। শীঘ্রই আরও এলাকায় প্রি-পেইড মিটার ব্যবস্থায় গ্যাস সরবরাহ করা হবে। অপচয় বন্ধে পর্যায়ক্রমে বিদ্যুত ও গ্যাসখাতে প্রি-পেইড মিটার দেয়া হবে। তিনি বলেন, বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতের দুর্নীতি বন্ধে বিদ্যুত ও খনিজ মন্ত্রণালয়কে ডিজিটালাইজড করা হচ্ছে। সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড হলে এ খাতের দুর্নীতি পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হবে। যত্রতত্র সিএনজি গ্যাস পাম্পের অনুমোদন দেয়া বিএনপি জামায়াতের বড় ভুল ছিল দাবি করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে সরকার ব্যাপকভাবে সিএনজি পাম্পের অনুমোদন দিয়েছিল। ছাত্রদল ও যুবদলের নেতারা বড় বড় নগরীর বিভিন্ন জায়গা দখল করে তাঁরা সিএনজি পাম্পের মালিক হয়েছে। সেই সময়ে গ্যাসের ব্যবহার সঠিকভাবে না হওয়াতে আজ দেশের গ্যাসের সংকট দেখা দিয়েছে। দেশের বিদ্যুত খাতে ২৪ শ’ কোটি মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে উল্লেখ করে তৌফিক-ই-ইলাহি চৌধুরী বলেন, গত পাঁচ বছরে বিদ্যুত খাতে যেসব প্রকল্প শেষ হয়েছে তাতে পাঁচ দশমিক দুই বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ হয়েছে, যেসব প্রকল্প নির্মাণ কাজ চলছে সেখানে আট দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনা তৈরি সময় অনেকেই অর্থের জোগান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। কিন্তু আমরা পাঁচ বছরে বিদ্যুতের উৎপাদন দ্বিগুণেরও বেশি করেছি। বিদ্যুত খাতে আওয়ামী লীগ সরকারের সাফল্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, মানুষের কর্ম দিয়ে তার পরিচয়। আগামী পাঁচ বছরের পরিকল্পনাও আমরা বাস্তবায়ন করব এবং বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশের দিকে নিয়ে যাব। অধ্যাপক ড. সুব্রত কুমার আদিত্য জানান, ২০০৯ সালের আগে দেশের ২৭টি বিদ্যুত কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ৪৯৪২ মেগাওয়াট। ২০১৪ সালের জুনে বিদ্যুত কেন্দ্রের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৪টিতে এবং উৎপাদন ক্ষমতা হয়েছে ১০৬৪৮ মেগাওয়াট। আগামী পাঁচ বছরে আরও প্রায় ১১ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা বাড়বে। তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে দেশে বিদ্যুত ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬৪ শতাংশ হয়েছে, যা ২০১৯ সালের মধ্যে ৯০ শতাংশ হওয়ার আশা করা হচ্ছে। গত পাঁচ বছরে মাথাপিছু বিদ্যুত ব্যবহার ২২০ ইউনিট থেকে ৩৪৮ ইউনিটে পৌঁছেছে। আবার একই সময়ে সিস্টেম লস কমেছে ১৬ শতাংশ থেকে কমে ১২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া গত পাঁচ বছরে জ্বালানি খাতে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর কথা উল্লেখ করেন তিনি।
×