ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আইএসের ব্যাপক প্রভাব পাকিস্তানে

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ২৫ নভেম্বর ২০১৪

আইএসের ব্যাপক প্রভাব পাকিস্তানে

ইরাকে জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সাফল্যের পর পাকিস্তানে এর হাওয়া বইছে। আর অপ্রত্যাশিতভাবেই পাকিস্তানজুড়েই তাদের প্রতীকী উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। দেশটির শহরের বস্তি থেকে তালেবানের শক্ত ঘাঁটিতে এই সংগঠনের লোগো ও নাম দেয়াল লিখনে, পোস্টারে ও প্যাম্পলেটে দেখা যাচ্ছে। আইএসের স্বঘোষিত খলিফা আবু বকর আল বাগদাদির প্রতি গত মাসে আনুগত্য ঘোষণা করেছে পাকিস্তানের কিছু জঙ্গী কমান্ডার। আইএস ইরাক ও সিরিয়ার বিরাট এলাকাজুড়ে এমন প্রভাব বিস্তার করেছে যে, তাদের নেটওয়ার্ক হাজার হাজার মাইল দূরের বিভিন্ন জঙ্গী নেটওয়ার্কগুলো প্রভাবিত এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। আইএসের বিজয় থেকে নিজেদের উদ্দীপ্ত করে তুলেছে পাকিস্তানের জঙ্গী সংগঠনগুলোকে। তারা আইএসের সহায়তা পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী বিদ্রোহী দলগুলোর খ- অংশের ওপর ছড়ি ঘোরানোর সুযোগও পাচ্ছে। এই সংগঠনটি আইএসআইএস বা আইএসআইএল নামেও পরিচিত। এই সফলতা পাকিস্তানের জঙ্গীদের উদ্যোমী করে তুলছে। পাকিস্তানে আইএস তাদের কার্যক্রম না চালালেও দেশটিতে তাদের প্রতীকী উপস্থিতিই উদ্বেগের কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে। পাক ইনস্টিটিউট ফর পিস স্টাডিজের ডিরেক্টর মোহাম্মদ আমির রানা বলেছেন, পাকিস্তানে আইএসের উপস্থিতি প্রতিষ্ঠার বিষয়টি ব্যাপার না। কারণ তারা ইতোমধ্যেই দেশের জঙ্গীদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করছে। এখন আইএস তাদের একটি শক্তিশালী কাঠামো প্রদান করেছে, যা তাদের বৃত্তান্তই পরিবর্তন করে দেবে। ১৯৮০ সালে পাকিস্তানে প্রতিষ্ঠিত আল কায়দা অন্যান্য চরমপন্থী আদর্শের ধারক হয়ে উঠেছে। গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন সফরের সময় পাকিস্তানের নতুন সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরীফ মার্কিন কর্মকর্তাদের বলেছেন, আইএসকে পাকিস্তানে ঘাঁটি গড়তে দেয়া হবে না। কিন্তু পাক কর্মকর্তারা বলেছেন, স্থানীয় জঙ্গীরা নিজেদের উদ্দেশ্য সাধনে আইএসের নাম ব্যবহার করছে। চলতি মাসে পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের নিজ শহর লাহোরের বৈদ্যুতিক খুঁটিতে আইএসের পোস্টার দেখা গেছে। পুলিশ এজন্য লস্কর-ই-জাংভির মতো জঙ্গী উপদলগুলোকে দায়ী করেছে। ইজাজ শরীফ দগার নামে এক পুলিশ কমান্ডার বলেছেন, তারা শিয়াদের ভয় দেখাতেই আইএসের নাম ব্যবহার করেছে। তবে এমনকি অজিহাদিরাও আইএস ব্র্যান্ডের প্রভাব ব্যবহার করছে। করাচির ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিবিদরা দাবি করেছেন, পশতুন অভিবাসীদের মাধ্যমে কিভাবে জঙ্গীরা ছড়িয়ে পড়ছে, আইএসের সমর্থনে দেয়াল লিখনেই তা দেখা যাচ্ছে। তবে পাকিস্তানি তালেবান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া গ্রুপের ভেতরে আইএসের খুবই বাস্তবসম্মত প্রভাব ফেলেছে, যা উদ্বেগে সৃষ্টির একটি শক্তিশালী অনুঘটক। আইএস অক্টোবর মাসে তালেবানের মধ্যে প্রকাশ্য বিভেদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওই সময় তালেবানের সাবেক মুখপাত্র শেখ মকবুলের নেতৃত্ব ছয় কমান্ডারের একটি দল আইএসের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে। আইএসের সঙ্গে হাত মেলানোর শাস্তি দিতে জানদুল্লাহর এক মুখপাত্রকে বহিষ্কার করেছে তালেবান। সম্প্রতি ওয়াগা সীমান্তে বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত রয়েছে এই সংগঠনটি। এদিকে আনসার বেইত আল মাকদিসকে সরাসরি সহায়তা করছে আইএস। তবে পাকিস্তানের কোন সংগঠনকে সহায়তা করার প্রকাশ্যে ঘোষণা দেয়নি তারা। -ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমস
×