ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সারাবছর ফলে, চাহিদা ভাল- খাবারের অনুষঙ্গ

প্রকাশিত: ০৫:০০, ২৫ নভেম্বর ২০১৪

সারাবছর ফলে, চাহিদা ভাল- খাবারের অনুষঙ্গ

এইচএম এরশাদ ॥ তিতা বলে এক সময় করলা খেতে পছন্দ করত না অনেকে। গৃহস্থালি ও জমিদার পরিবারসহ বহু পরিবারে শুধু নববর্ষের শুরুতে ছেলেমেয়েদের মুখে তুলে দিত তিতা করলা। আর এখন সেই তিতা করলা অসংখ্য পরিবারে অন্যান্য তরকারির মধ্যে ভাজি হিসেবে থাকছেই প্রতিদিন। আর ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য বাজার থেকে তিতা করলা কেনাটা যেন নিয়মে বা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এটি অন্যতম ঔষধি সবজি হিসেবেও পরিচিত অনেকের কাছে। এক সময় করলার দাম ছিল কেজি প্রতি মাত্র ১০ টাকা। এখন সেই করলা প্রতি কেজি ৫০-৬০ টাকা হারে বিক্রি হচ্ছে বাজারে। বাজারে চাহিদা দেখে কক্সবাজারের প্রত্যন্ত অঞ্চলে করলা চাষের প্রতি ঝুঁকে পড়েছে চাষীরা। মৌসুমী সবজি বা তরিতরকারির মধ্যে আলু যেমন সারা বছরে বাজারে পাওয়া যায়, তেমনি তিতা করলাও এখন কক্সবাজারের ৮টি উপজেলার প্রতিটি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এই করলা চাষে মনোযোগী হয়ে সফল হয়েছেন চাষী এমনকি গৃহিণীরাও। উখিয়া, চকরিয়া, রামু ও টেকনাফে দেখা গেছে খামারিদের করলা চাষে বাম্পার ফলন। দামও ভাল থাকায় সাধারণ কৃষকদের মধ্যে অফুরান আনন্দ হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে কম পুঁজিতে বেশি লাভ হওয়ায় কৃষকরা দিন দিন করলা চাষের প্রতি আরও বেশি আগ্রহী হয়ে পড়ছেন। কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এ বছর জেলার চারটি উপজেলায় ২৬০ হেক্টর জমিতে করলা চাষ করা হয়েছে। দেখা গেছে, প্রায় ৪-৫ হাজার সাধারণ কৃষক করলা চাষে জড়িত। করলা চাষ সহজ হওয়ায় গ্রামীণ কৃষককুল দিন দিন এই চাষের দিকে মনোযোগ দিচ্ছেন। দো ফসলী তথা বছরে দুই বার সহজে করলা চাষ করা যায় বলে জেলার কৃষক সমাজে এই ফসলটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তিতা করলার বাম্পার ফলন হওয়ায় সাধারণ মানুষ ৫০ বা ৪০ টাকার মধ্যেও সহজে ক্রয় করতে পারছে। তবে বাজারে করলার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় অনেক সময় ৬০ টাকা দামেও কিনতে হয় বলে জানান ভোক্তাদের অনেকে। জানা যায়, বছর দু’য়েক আগেও করলা উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন স্থান থেকে নিয়ে আসা হতো কক্সবাজারে। এখন আর দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে করলা আনা হয় না। স্থানীয় তরকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিতা করলা বর্তমানে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। যা আগে ভোক্তাদের চাহিদা থাকায় চড়া মূল্যে অন্য জেলা থেকে আনার প্রয়োজন পড়ত। এখন জেলার বিভিন্ন ক্ষেতে উৎপাদিত করলা দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে। কৃষকরা জানান, আগস্ট থেকে অক্টোবর ও অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর তিতা করলার দুই বার চাষ করা হয়ে থাকে। সাধারণভাবে রোপণের ৪০-৪৫ দিনের মধ্যে ক্ষেতের করলা বিক্রির উপযোগী হয়ে ওঠে। মাত্র দেড় মাসের মধ্যে সহজ উপায়ে নিজ নিজ ক্ষেতের ফসল বিক্রি করতে পারেন কৃষকরা। এতে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে করলা চাষ ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
×