ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গভীর রাতে ‘সদস্য’ রাজনীতি

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২২ নভেম্বর ২০১৪

গভীর রাতে ‘সদস্য’ রাজনীতি

এক দশকের অধিককাল ধরে জাতীয় প্রেসক্লাবের চালচিত্র হলো সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ক্লাব কক্ষগুলো জামায়াত-শিবির এবং তাদের পৃষ্ঠপোষক নেতা-কর্মীদের রাজনৈতিক আখড়ায় পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের কক্ষ। অন্য কক্ষগুলোর মধ্যে এখানে জামায়াত, তো ওখানে বিএনপি, এখানে শিবির তো, ওখানে ছাত্রদল সভা করছে, যততত্র অসৌজন্যমূলক চলাফেরা ক্লাব সদস্যদের প্রবেশ বা বেরনো অসহনীয়-অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। কখনও কখনও এই বহিরাগতরা অশোভন আচরণও করছে ক্লাব সদস্যদের সঙ্গে, কর্মচারীদের সঙ্গে। স্বাধীনতার পক্ষের বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালনকারী সাংবাদিকদের আবেদন অগ্রাহ্য করে কেবল জামায়াত-শিবির ও তাদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানকারী বিএনপিপন্থীদের সদস্য বানিয়ে এবং নিজেদের ভোটার সংখ্যা বাড়িয়ে প্রায় এক দশক ধরে স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি ক্লাব দখল করে আছে। নিয়ম-নীতি, গঠনতন্ত্র কোন কিছুই তারা মানছে না। এদের ক্লাব পরিচালনা আচার-আচরণ ফ্যাসিজমকেও হার মানায়। এদের ফ্যাসিজমের কারণে অতীতেও আমাদের প্রধান কবি তৎকালীন দৈনিক বাংলা সম্পাদক শামসুর রাহমান, কবি ও দৈনিক বাংলার সাংবাদিক হাসান হাফিজুর রহমান, তৎকালীন দৈনিক বাংলার বার্তা সম্পাদক ও বর্তমান জনকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক তোয়াব খান, দৈনিক বাংলার বাণী প্রবীণ সাংবাদিক মীর ভাই, একই পত্রিকার সিনিয়র সহকারী সম্পাদক কলাম লেখক (বর্তমান যোগাযোগমন্ত্রী) ওবায়দুল কাদের প্রমুখ ক্লাব সদস্য হতে পারেননি। ১৯৮৩ সালে প্রথমবার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবার পর আমি কয়েকজনের নামে সদস্যপদের আবেদনপত্র পূরণ করে প্রথমে কবি শামসুর রাহমানের কাছে যাই। স্যার আপনি শুধু স্বাক্ষরটি করে দিন, বাকিটা আমি করব। তিনি সাফ না করে দিলেন। একইভাবে মীর ভাইয়ের কাছে গেলে তিনিও আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। প্রেসক্লাবে ফিরে অনেকক্ষণ ভেবেছি। তাঁরা ঠিকই তো করেছেন। তাঁদের মতো সাংবাদিকদের আবেদনপত্র প্রত্যাখ্যান হবে এটি কেবল তাঁদের অপমান নয়, গোটা সংবাদপত্র জগত, এমনকি দেশের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি তথা প্রগতিবাদিতার অপমান। সম্প্রতি জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক ও বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের এক গোলটেবিল আলোচনায় আমি (দুই মেয়াদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হিসেবে) বলেছিলাম রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ তথা সকল প্রগতিশীল আন্দোলন সাংবাদিকগণ রাজনৈতিক নেতৃত্বের পাশাপাশি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। জাতীয় প্রেসক্লাবকে বলা হতো সাংবাদিকদের সেকেন্ড হোম। কিন্তু যেভাবে এটাকে রাজাকারীকরণ করা হচ্ছে তাতে করে এমন দিন আসতে পারে এর অভিন্ন সত্তা টিকিয়ে রাখা দায় হবে, সাংবাদিক ইউনিয়নের মতো দ্বিখি ত হয়ে যাবে। পরে চ্যানেল ২৪-এর এক টকশোতে আমি এও বলেছিলাম, বিগত এক দশক ধরে ক্লাবের কোন সদস্যপদ দেয়া হচ্ছে না। কারণ আন্দোলনকারীদের বেশির ভাগই স্বাধীনতার চেতনার পক্ষের সাংবাদিক। দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে কিন্তু রাজাকার অধ্যুষিত ম্যানেজমেন্ট অনড়। যে কারণে সদস্যপদ লাভে ব্যর্থ হয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) জন্ম হয়েছে। আজ ডিআরইউ প্রেসক্লাবের মতোই প্রভাবশালী একটি প্রতিষ্ঠান। এখন প্রেসক্লাবের সদস্য ৮শ’র কিছু বেশি, অথচ ডিআরইউ’র সদস্য দেড় হাজারের মতো। এরমধ্যে অনেক ক্লাব সদস্যও রয়েছেন। চ্যানেল ২৪-এ আমি এও বলেছিলাম, সদস্যপদ প্রত্যাশী সাংবাদিকগণ দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন, স্বাধীনতার পক্ষের ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ, সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দও তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন। এবার আর কোন রকম ছল-চাতুরি অতীতের মতো জোচ্চুরি চলবে না। এবার পেশাদার সাংবাদিকদের সদস্যপদ দিতে হবে। নইলে মাঝখান দিয়ে দেয়াল উঠলেও অবাক হব না। কিন্তু চোরারা কখনও ধর্মের বাণী শোনে না। বর্তমান ম্যানেজিং কমিটি গত সপ্তাহে কয়েক শ’ (পাঁচ শতাধিক) আবেদনপত্র থেকে বাছাইকৃত ১৭১ জনকে সদস্যপদ দিয়ে নোটিস বোর্ডে টানিয়ে দিয়েছে। দেখা গেছে, এই ১৭১ জনের মধ্যে দুই- তৃতীয়াংশই জামায়াত-বিএনপি, তথা স্বাধীনতার চেতনাবিরোধী শিবিরের দৈনিক নয়াদিগন্ত, দিনকাল, সংগ্রাম, ইনকিলাব, আমার দেশ প্রভৃতি পত্রিকা থেকে নেয়া হয়েছে। এরা কারা, কি তাদের পরিচয়, কি চিন্তা-চেতনা, বুঝতে কারই কষ্ট হবার কথা নয়। বিগত ৫ জানুয়ারি ও তার আগে যুদ্ধাপরাধীর বিচার এবং শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চের প্রতিষ্ঠার পর দেশব্যাপী হত্যা, জ্বালাও-পোড়াও, লুটতরাজ, পুলিশ-বিজিবিসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর ওপর আক্রমণকারী ও হত্যাকারীদের নামও এই তালিকায় রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রয়েছে দিনকালের নামে হাওয়া ভবনের পিয়নের নামও। স্বাধীনতার পক্ষের ফোরাম থেকে নির্বাচিত কমিটির সদস্যগণ (জুনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও অপর ৪ জন সদস্য) ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বা ‘ব্ল্যাক বল’ দিয়ে বেরিয়ে আসেন। অবাক ব্যাপার হলো তাদের ‘নোট অব ডিসেন্ট’ রেকর্ড করা হয়নি বা প্রসিডিং খাতায় লিপিবদ্ধ করা হয়নি। রাত একটায় ওরা ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়ে বেরিয়ে আসার পর বর্তমান সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে কিছু সদস্য, একদল বহিরাগত লোক এবং অফিসের কর্মচারীদের দিয়ে রাতভর এই ১৭১ জনের ভর্তি ফি পরিশোধ করে তাদের নামে জনে জনে চিঠি ইস্যু করে সকালের মধ্যে তাদের পাঠিয়ে দেয়া হয় এবং নোটিসবোর্ডে টানিয়ে দেয়া হয়। দেখা গেছে, সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে বিএনপি স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য, একজন উপদেষ্টা (সাংবাদিকও) বিজয়ের হাসি নিয়ে ক্লাবে প্রবেশ করেন। তাদের গ্রুপের নতুন চিঠি পাওয়া সদস্যরাও সকালেই ক্লাবে চলে আসতে শুরু করে। এর আগেও ২০০৫ সালে এমনিভাবে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বা ‘ব্ল্যাক বল’ রেকর্ড না করে গভীর রাতে একচেটিয়া ১০৫ জনকে সদস্যপদ দেয়া হয়, যাদের সবাই স্বাধীনতাবিরোধী চেতনার পক্ষের লোক। একটি ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো এর আগেও সদস্যপদ দেয়ার ক্ষেত্রে ক্লাব প্রেসিডেন্টের ৫ জন, সাধারণ সম্পাদকের ৫ জন সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে নিয়ে নিত। এবারও নিয়েছে ৩ জন ৩ জন করে। তবে এবার অবাক করে দিয়ে আরও একটি ইন্টারেস্টিং জোচ্চুরি করা হয়। যেমন ১৫ জনের একটি তালিকা হাজির করে বলা হয়, তারা নিরপেক্ষ। তাদের এই নিরপেক্ষতা দৈনিক প্রথম আলো, কিছু টিভি চ্যানেলের সুশীল বাবুদের মতোই জামায়াত-শিবিরের ধ্বংসযজ্ঞকে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার বলার মতো। কারণ ওই সুশীল বাবুরা যে নিরপেক্ষ (?) এইভাবে স্বাধীনতার বিপক্ষ চেতনার শক্তি ভোটের দিক থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবে তাদের নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া চিরস্থায়ী করে নিয়েছে। অথচ এই প্রেসক্লাব ছিল সার্বজনীন এবং প্রগতিশীলতার প্রতীক। অগ্রজদের মুখে শুনেছি বাংলা সাংবাদিকতার পথিকৃত মওলানা আকরাম খাঁর নেতৃত্বে সকল সম্পাদক ও সাংবাদিকদের ১৯৬১ সালে আইয়ুবের সংবাদপত্র নিবর্তন বিরোধী মিছিল বের হয়েছিল এই জাতীয় প্রেসক্লাব থেকেই। ১৯৬৪ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হলে তৎকালীন প্রখ্যাত তিন সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া (ইত্তেফাক), আবদুস সালাম (অবজারভার) ও জহুর হোসেন চৌধুরী (সংবাদ) প্রেসক্লাবে আসেন। এর কিছুক্ষণ পর আসেন সেদিনের বাঙালী নেতা শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁরা কিছুক্ষণ বসে চা-এর কাপে আলোচনা করেন। তারপরই শেখ মুজিবের নেতৃত্বে ‘পূর্ব বাংলা রুখিয়া দাঁড়াও’ ব্যানার নিয়ে ঢাকায় মিছিল বের হয়, পরদিন তিনটি কাগজেও অভিন্ন সম্পাদকীয় বেরোলে ‘পূর্ব বাংলা“রুখিয়া দাঁড়াও’ শিরোনাম দিয়ে, দাঙ্গা বন্ধ হয়ে গেল। এই প্রেসক্লাব থেকেই ১৯৭৮ সালে মিলিটারি জিয়ার ‘মার্শাল ল’ মানি না, মানব না বলে সেøাগান দিয়ে সাংবাদিকরা মিছিল বের করলে লাঠিচার্জ করা হয়েছিল, কয়েকজন আহত হয়েছিল, ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল (পরে ছেড়ে দেয়া হয়)। শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে বর্তমান সিপিবি কার্যালয়ের সামনে ১৫ দলের সমাবেশে একদিকে জামায়াতের বোমাবাজি অপরদিকে পুলিশের তাড়া খেয়ে এবং লাঠিচার্জের কারণে প্রেসক্লাবে আশ্রয় নিলে পুলিশ ক্লাবের অভ্যন্তরে ঢুকে রবার বুলেট, লাঠিচার্জে অর্ধশতাধিক সাংবাদিক আহত হন। এরশাদবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু ছিল এই প্রেসক্লাব। ১৯৯১ সালে ভারতে উগ্র হিন্দুরা বাবরী মসজিদ ভাংচুর করলে বাংলাদেশের একজন (মরহুম) সাংবাদিক ভয়েস অব আমেরিকায় একটি মিথ্যে সংবাদ পাঠান, পুরান ঢাকায় বাবরী মসজিদ ভাঙ্গা আনন্দে হিন্দুরা মিষ্টি বিতরণ করেছে? ধর্ম-ব্যবসায়ী একটি পত্রিকাও একই খবর প্রকাশ করে। এতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হিন্দুদের মন্দির ভাঙ্গা শুরু হয়। তখন সর্বজনশ্রদ্ধেয়া জননী সাহসিকা কবি বেগম সুফিয়া কামাল, প্রফেসর কবির চৌধুরী, প্রফেসর খান সারওয়ার মুরশিদ, ড. কামাল হোসেন, ফয়েজ আহমদ, রামেন্দু মজুমদার, প্রফেসর মনতাসীর মামুন, শাহরিয়ার কবির, আয়েশা খানম, সম্ভবত বিচারপতি হাবিবুর রহমানও ছিলেন, ছিলেন ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম, সবার নাম এখন মনে নেই। আমরা শহীদ মিনারে একত্রিত হয়ে ঢাকেশ্বরী মন্দির হয়ে পুরনো ঢাকায় মিছিল করি। মিছিল শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবে এসে (এখন যেখানে নিচতলার খাবার ঘর, তখন তা ছিল টিভি কক্ষ) আমরা বসে আলোচনা করি। একটি বিবৃতি লিখে ফয়েজ আহমেদের স্বাক্ষরে তা সংবাদপত্রে চলে যায় এবং ছাপা হবার পর দাঙ্গা বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের বিবৃতির মর্মকথা ছিল বাবরী মসজিদ ভেঙ্গেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের উগ্রবাদী ধর্মান্ধ হিন্দুরা। এটি একটি জঘন্য নিন্দনীয় এবং সাম্প্রদায়িক কাজ, কিন্তু এর জন্য বাংলাদেশে হিন্দুদের মন্দির দায়ী হবে কেন? কথা ছিল বেলা ১১টায় পরদিন আবার বৈঠক হবে। কিন্তু যথাসময়ে ক্লাবে এসে দেখা গেল কক্ষের দরজায় তালা, কালো কালিতে লেখা ‘অতিথিদের প্রবেশ নিষেধ।’ অথচ জিয়া-এরশাদের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, তারও আগে জনতার মঞ্চের সময় এই প্রেসক্লাবে হাজার হাজার মানুষ এসেছে। এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় আমি সাধারণ সম্পাদক ছিলাম-তখন প্রতিনিয়ত শেখ হাসিনা প্রেসক্লাবে আসতেন, খালেদা জিয়াও আমার টেবিলের সামনে বসে দলবল নিয়ে চা খেয়ে যেতেন। এতটুকু শৃঙ্খলা নষ্ট হয়নি তখন। এইভাবে জাতীয় প্রেসক্লাব এতদিন বাঙালীর আন্দোলন-সংগ্রামের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে ছিল। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিন শতাধিক বুদ্ধিজীবীর সঙ্গে ১৩জন সাংবাদিকও শহীদ হয়েছিলেন- যেমন সিরাজউদ্দিন হোসেন, শহীদুল্লাহ কায়সার, খন্দকার আবু তালেব, নিজামুদ্দীন আহমেদ, এস এ মান্নান লাডু ভাই, আ.ন.ম গোলাম মোস্তফা, সৈয়দ নাজমুল হক, আবুল বাশার, শিব সাধন চক্রবর্তী, চিশতি শাহ হেলালুর রহমান, মুহম্মদ আখতার, সেলিনা পারভীন ও শহীদ সাবের। অথচ জামায়াত-শিবির-আল-বদরদের হাতে প্রেসক্লাবের ম্যানেজমেন্ট পুরোপুরি তুলে দেয়ার বন্দোবস্ত করা হলো। তবে হ্যাঁ, এটা আন-চ্যালেঞ্জে যাবে না। স্বাধীনতার পক্ষের ফোরাম ও ইউনিয়ন এরই মধ্যে তাদের কর্মপন্থা ঠিক করেছে। ভোটার তালিকা সংশোধন না করলে এবার আর তারা নির্বাচনে অংশ নেবে না। একই সঙ্গে নির্বাচন যাতে না করতে পারে সে ব্যবস্থাও করা হবে। ক্লাবের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কেউ পেশা ত্যাগ করলে বা পরিবর্তন করলে তিনি আর ভোটার সদস্য বা স্থায়ী সদস্য থাকবেন না, ভোটও দিতে পারবেন না। এ রকম প্রায় অর্ধশত ভোটার সদস্য রয়েছে, যাঁরা ভোটের দিন সুদূর ইংল্যান্ড-আমেরিকা থেকে এসেও ভোট দিয়ে যায়। এবারও প্রায় সবাই স্বাধীনতার বিপক্ষ চেতনার। ভোটও দেয় তাদের সমগোত্রীয়দের। এইভাবে তারা গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনকারী নির্বাচন করে বার বার বৈধতা নিয়ে নিজেদের পক্ষের ভোটার বাড়িয়ে নিয়েছে। তাই এবার দাবি উঠেছে- ১. ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বা ‘ব্ল্যাক বল’ দেয়ার পর ১৭১ জনের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। কেননা এটা ক্লাব গঠনতন্ত্রের লঙ্ঘন। গণতন্ত্র অনুযায়ী ম্যানেজিং কমিটির একজন সদস্য ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বা ‘ব্ল্যাক-বল’ দিলেও আর কাউকে সদস্যপদ দেয়া যাবে না, যেভাবে কবি শামসুর রাহমানদের সদস্যপদ প্রদানের প্রস্তাব নাকচ করা হয়েছিল। তাই এবার দাবি উঠেছেÑ প্রকাশিত তালিকায় যারা সদস্য হয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই, আমরা চাই সকল দরখাস্ত সততার সঙ্গে বাছাই করে আলোচনার মাধ্যমে সদস্যপদ দিতে হবে। ২. দ্বিতীয় যে অর্ধশতাধিক পেশায় নেই তাদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। ৩. তৃতীয় প্রকাশিত নির্বাচন তফসিল প্রত্যাহার করে সংশোধিত ভোটার তালিকাসহ নতুন তফসিল ঘোষণা করতে হবে। অন্যথায় নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। ঢাকা-২১ নবেম্বর ২০১৪ লেখক : ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক
×