ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জ্যামিতির নয়া ফর্মুলাÑ সমৃদ্ধ হচ্ছে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ২২ নভেম্বর ২০১৪

জ্যামিতির নয়া ফর্মুলাÑ সমৃদ্ধ হচ্ছে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা

সমুদ্র হক ॥ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের অঙ্কের ঘন জ্যামিতি অংশের ঘন বস্তু ও ঘনকের ফর্মুলা উদ্ভাবনের পর তা ডিভিডি, পেনড্রাইভ, সিডি ও মেমোরি কার্ডে ট্রান্সফার করে ইলেকট্রনিক ডিভাইসে পাঠদান করছেন শিক্ষক রেজাউল করিম। এর আগে তিনি মাধ্যমিকের সপ্তম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পাটিগণিতের আয়তক্ষেত্র ও বর্গক্ষেত্র অঙ্ক কষার চারটি সূত্র উদ্ভাবন করেছেন। যা শিক্ষাক্ষেত্রে প্রশংসিত হয়েছে। এবার তিনি ঘন জ্যামিতির অংশে গবেষণা করে যা উদ্ভাবন করেছেন তা স্কুল-কলেজের শিক্ষার পাশাপাশি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে কাজে দেবে। এমন সব সূত্রের উদ্ভাবক গণিতের শিক্ষক রেজাউল করিমের বাড়ি সিরাজগঞ্জে। তবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে বগুড়া বাস করছেন এবং বগুড়ার কাহালুর ডাঃ সোবহান হাই স্কুলের গণিতের শিক্ষক। তিনি স্কুলে পূর্বের ও বর্তমানের সূত্র উদ্ভাবনের পর যে পাঠ দেন তা ভিজুয়ালাইজেশন (ভিডিও ক্যামেরায় প্রামাণ্য ছবি) করে ডিজিটাল ভিডিও (ডিভিডি) পেনড্রাইভে, মেমোরি কার্ডে পার করে শিক্ষার্থীদের হাতে দেন। শিক্ষার্থীরা কয়েকটি মাধ্যমে তা দেখে নিজেদের সমৃদ্ধ করে। স্মার্ট এ্যানড্রয়েড মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, ট্যাব, আই পড, ই পড, ডেস্কটপ কম্পিউটারে শিক্ষার্থীরা তা দেখে মনে করে ক্লাসরুমেই শিক্ষক তাদের ক্লাস নিচ্ছেন ও বুঝিয়ে দিচ্ছেন। শিক্ষক রেজাউল করিম শিক্ষার্থীদের বলে দিয়েছেন এভাবে পাঠ নেয়ার সময় কোন কিছু বুঝতে অসুবিধা হলে যেন ফোন করে জেনে নেয়। শিক্ষক রেজাউল করিম জানালেন ঘন জ্যামিতির ঘনবস্তু অংশটি সকল দিকে সমান নয় আয়তকার। আর ঘনক হলো দৈর্ঘ্য প্রস্থ ও উচ্চতা সকল দিক সমান। তার উদ্ভাবিত ফর্মুলার মধ্যে আছে সহজেই থিকনেস বেধ বা পুরত্বর আয়তন নির্ণয়। দেয়ালের বেধ বা পুরত্বের আয়তন নির্ণয়, আয়তকার বা বর্গাকার ক্ষেত্রের বাইরের ও ভিতরের অংশ নির্ণয়। কিভাবে তার সূত্র প্রয়োগ হয় এই বিষয়ে জানালেনÑকোন আয়তকার বা বর্গাকার ক্ষেত্রের দৈর্ঘ্য প্রস্থ চারপাশে দেয়ালের উচ্চতা এবং দেয়ালের বেধ বা পুরুত্বের একক ধরে আয়তকার ক্ষেত্রের জন্য একটি ফর্মুলায় হিসাব বের করা। বর্গাকার ক্ষেত্রের জন্য দেয়ালের বেধ বা পুরুত্বের আয়তনের সঙ্গে একটি সূত্র দিয়ে হিসাব কষে বেধ বা পুরুত্বের ভিতরের ও বাইরের হিসাব করা। কোন ঘন বস্তু বা ঘনকের দৈর্ঘ্য উচ্চতা নিয়ে বেধ বা পুরুত্ব ভিতরে বাইরে সকল হিসাব এইসব সূত্রের মাধ্যমে খুবই সহজে করা সম্ভব। জ্যামিতির এই সূত্রের মাধ্যমে একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন কাঠের কাজসহ এই বিষয়ক সকল কাজের হিসাব দ্রুত নিশ্চিত করতে পারে। এ জন্য জটিল কোন সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটরের দরকার নেই। সবচেয়ে বড় কথা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা আয়তক্ষেত্র বর্গক্ষেত্রের অঙ্ক নিয়ে যেভাবে চিন্তিত হয়ে কঠিন মনে করে তাদের কাছে এই ফর্মুলা এতটাই সাড়া ফেলেছে যে মধ্যম গ্রেডের অনেক শিক্ষার্থীরা অঙ্কের এই চ্যাপ্টারে ভাল নম্বর তুলেছে। যাদের মধ্যে অঙ্ক জ্যমিতি ভীতি ছিল তারা সহজেই পাঠ নিতে পারেছ। ক’জন শিক্ষার্থী বলল, এখন পড়ার টেবিলে বসে বিষয়ভিত্তিক পড়ার সময় কোন কিছু সহজে বোধগম্য না হলে কম্পিউটারে ডিভিডি বা সিডি চালিয়ে দিয়ে পাঠ নেয়া সম্ভব হয়। শিক্ষকগণের কাছে একটি পাঠ কোন কারনে একাধিকবার বুঝিয়ে নিতে গেলে বিরক্ত হতে পারেন। সকলের মেধা তো আর সমান হয় না। এইক্ষেত্রে সিডি ডিভিডি মোবাইল ফোনের মেমোরি কার্ড বড় ভূমিকা পালন করে। বারবার তা দেখে ও শুনে মেধায় নেয়া যায়। শিক্ষক রেজাউল করিম মনে করেণ, এর আগে উদ্ভাবিত রাস্তাঘাট বাগান ঘরবাড়ি অর্থাৎ ভূমির সকল বিষয়ের ওপর আয়তক্ষেত্র ও বর্গক্ষেত্রের সূত্র এবং বর্তমানে ঘন জ্যামিতির ঘনবস্তু ও ঘনকের যে সূত্র উদ্ভাবন করেছেন তা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ন্যাশনাল কারিকুলাম টেক্সট বুক বোর্ড (এনসিটিবি) সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিলে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে। রেজাউল করিম বললেন তার এই সূত্র প্রমাণের জন্য সরকারের শিক্ষা বিভাগের যে কেউ ডাকলে তিনি প্রমাণ করে দেখিয়ে দেবেন। তার আশা উদ্ভাবিত এই সূত্র শিক্ষার কল্যাণে কাজে আসুক।
×