ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মেসির আর্জেন্টিনাকে হারাল রোনাল্ডোর পর্তুগাল

প্রকাশিত: ০৪:৫৬, ২০ নভেম্বর ২০১৪

মেসির আর্জেন্টিনাকে হারাল রোনাল্ডোর পর্তুগাল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফুটবলবিশ্বে যেন উৎসবের আবহ সৃষ্টি হয়েছিল! অবশ্য না হওয়ারও কারণ ছিল না। কেননা জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়িয়ে মুখোমুখি হয়েছিলেন ফুটবলের দুই মহাতারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ও লিওনেল মেসি। কিন্তু এই দুই সুপারস্টার আবারও ব্যর্থতার স্বাক্ষর রেখেছেন জাতীয় দলের হয়ে। মঙ্গলবার রাতে ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারের ওল্ডট্রাফোর্ডে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল আর্জেন্টিনা ও পর্তুগাল। শেষ মুহূর্তে রাফায়েল গুয়েররেইরোর গোলে ব্রাজিল বিশ্বকাপের রানার্সআপদের ১-০ গোলে হারিয়েছে পর্তুগীজরা। মেসি-রোনাল্ডোর কারণেই ম্যাচটি ছিল সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। কিন্তু দুই দেশের দুই অধিনায়কই বলা চলে সুপার ফ্লপ ছিলেন। দু’জনই খেলেছেন ম্যাচের প্রথম ৪৫ মিনিট। বিরতির পর দলের দুই প্রাণভোমরাকে মাঠে নামাননি আর্জেন্টিনা কোচ জেরার্ডো মার্টিনো ও পর্তুগাল কোচ ফার্নান্ডো সান্টোস। ম্যাচ শেষে পর্তুগীজ কোচ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেও হতাশা ধরে রাখতে পারেন আর্জেন্টিনার মার্টিনো। ওল্ডট্রাফোর্ডে ম্যাচ হওয়ার কারণে মানসিকভাবে কিছুটা হলেও এগিয়ে ছিলেন রোনাল্ডো। কেননা এই মাঠেই ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে খেলে নিজেকে বিশ্বসেরাদের কাতারে নিয়ে আসেন। তাছাড়া চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মেসির সঙ্গে ব্যক্তিগত লড়াই তো ছিলই। যে কারণে সবার দৃষ্টি ছিল ওল্ডট্রাফোর্ডে। কিন্তু সেই প্রত্যাশায় গুড়েবালি হয়েছে। কেউই নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। প্রথম ৪৫ মিনিট মাঠে ছিলেন দু’জনই। এই সময়ে দলকে তেমন সহায়তা তো করতে পারেননিই, বরং মেসি গোলে শট নিতে পারেন মাত্র ২টি, আর রোনাল্ডো ১টি। যার সবই ছিল লক্ষ্যভ্রষ্ট। মেসির অবশ্য একটি প্রচেষ্টা পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়, কিন্তু রোনাল্ডো বলার মতো কিছুই করতে পারেননি। যে কারণে স্টেডিয়ামে উপস্থিত প্রায় ৪২ হাজার দর্শককে হতাশ হতে হয়েছে। বরাবরের মতো ম্যাচে বলের দখলে এগিয়ে ছিল আর্জেন্টিনা। সংখ্যাগরিষ্ঠ সময় নিজেদের অধীনে বল রেখেও ফিনিশিংয়ের অভাবে গোল পায়নি বিশ্বকাপের রানার্সআপরা। পক্ষান্তরে পাল্টা আক্রমণ থেকে কাক্সিক্ষত গোল পেয়ে জয় তুলে নেয় পর্তুগাল। ম্যাচের ১২ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত আর্জেন্টিনা। থিয়াগো গোমেজ ও পেপেকে পেছনে ফেলে দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে যান মেসি। তারপর এগিয়ে আসা পর্তুগালের গোলরক্ষকের দুই পায়ের মধ্যে দিয়ে শট নিয়েছিলেন বার্সিলোনা তারকা। কিন্তু দুর্ভাগ্য মেসির। তাঁর শট পোস্টের নিচের দিকে লেগে প্রতিহত হয়। ২৯ মিনিটে সুযোগ পেয়েছিলেন রোনাল্ডোও। ডান দিক থেকে ডিফেন্ডার জোসে বোসিংগুয়ার লম্বা ক্রস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডি বক্সের মধ্যে দুই জনকে চমৎকারভাবে কাটিয়ে গোলমুখে শটও নেন তিনি। কিন্তু বল ক্রসবারের উপর দিয়ে চলে যায়। বিরতির সময় মেসি ও রোনাল্ডোকে তুলে নেন দু’দলের কোচ। ৬১ মিনিটে আক্রমণ বাড়াতে গঞ্জালো হিগুয়াইনের পরিবর্তে কালোস তেভেজকে মাঠে নামান আর্জেন্টাইন কোচ। এরপরও অবশ্য তেমন কিছু করতে পারেনি দক্ষিণ আমেরিকার দেশটি। প্রথমার্ধের মতো বল দখলে এগিয়ে থাকলেও বলার মতো কোন সুযোগই তৈরি করতে পারছিল না দিয়াগো ম্যারাডোনার উত্তরসূরিরা। ম্যাচটি গোলশূন্য ড্রয়ের দিকেই এগোচ্ছিল। কিন্তু যোগ করা সময়ের নাটকীয়তায় দারুণ জয় পায় পর্তুগাল। যোগ করা দুই মিনিটের প্রথম মিনিটে (৯১ মিনিট) বাজিমাত করেন রাফায়েল গুয়েররেইরো। ডি বক্সের মধ্যে ডান দিকের গোল লাইনের কাছ থেকে ক্রস দিয়েছিলেন বদলি মিডফিল্ডার রিকার্ডো কুয়ারেসমা। তা থেকেই দুর্দান্ত এক ডাইভে হেড করে বল জালে পাঠান করেন ২০ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডার। জাতীয় দলের হয়ে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নেমেই জয়ের নায়ক বনে গেছেন বদলি হিসেবে নাম রাফায়েল।
×