ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কার্বন নির্গমন হ্রাসে ॥ চীন-মার্কিন চুক্তি

প্রকাশিত: ০৪:৪৩, ১৩ নভেম্বর ২০১৪

কার্বন নির্গমন হ্রাসে ॥ চীন-মার্কিন চুক্তি

কার্বন গ্যাস নির্গমন কমাতে সম্মত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। তবে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে কিছুটা পার্থক্য লক্ষ্য করা গেছে। চীন এই প্রথমবারের মতো কার্বন নির্গমনে সম্মতির কথা জানাল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও তার চীনা প্রতিপক্ষ শি জিনপিং বুধবার বেজিংয়ে চুক্তিটি সই করেন। খবর এএফপি, গার্ডিয়ান ও ওয়াশিংটন পোস্ট অনলাইনের। কার্বন নির্গমন বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছতে গোপনে চূড়ান্ত করে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র ২০২৫ সালের মধ্যে নির্গমনের হার ২৫ শতাংশ কমাতে এবং চীন ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন শূন্য থেকে ২০ শতাংশে সীমিত রাখতে রাজি হয়েছে। চীন বিশ্বের বৃহত্তম কার্বন নির্গমনকারী দেশ। চীন-মার্কিন কার্বন সমঝোতাটি আগামী বছর জাতিসংঘের উদ্যোগে প্যারিসে অনুষ্ঠেয় জলবায়ু সম্মেলনের আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। প্যারিস সম্মেলনে ২০২০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন কমিয়ে আনতে বৈশ্বিক চুক্তি সম্পাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। এই প্রথমবারের মতো চীন কার্বন নির্গমন কমাতে একটি নির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি দিল। এর আগে কার্বন নির্গন উচ্চহার কিছুটা কমাতে সম্মত হলেও এমন কোন প্রতিশ্রুতি বেজিং দেয়নি। যুক্তরাষ্ট্র ২০০৫ সালকে ভিত্তি ধরে ২০২৫-২৬ সালে কার্বন নির্গমনের মাত্রা ২৫ থেকে ২৮ শতাংশে কমিয়ে আনবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতোমধ্যেই ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন ৪০ শতাংশ কমিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বেজিং গ্রেট হল অব দ্য পিপলে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ওবামা বলেন, বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি এবং বৃহৎ কার্বন নির্গমনকারী হিসেবে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কাজ করতে আমাদের উভয় দেশের দায়বদ্ধতা রয়েছে। ঐতিহাসিক চুক্তির কথা ঘোষণা করতে পেরে আমি গর্বিত। চীন যে কার্বন নির্গমনে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সেজন্য আমি প্রেসিডেন্ট জিনপিং, তার প্রশাসন ও সরকারকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। ওবামা বলেন, কার্বন নির্গমন হ্রাসের যে লক্ষ্যমাত্রা যুক্তরাষ্ট্র স্থির করেছে তা উচ্চাভিলাষী হলেও অর্জনযোগ্য। তিনি আরও বলেন, চীন-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে চুক্তিটি একটি মাইলফলক, বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমরা একসঙ্গে কাজ করলে যে কোন লক্ষ্য অর্জন করা যে সম্ভব এর মধ্য দিয়ে সেটা প্রমাণিত হলো। চীন ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন শুন্য থেকে ২০ শতাংশের কাছাকাছি পর্যায়ে রাখতে সম্মত হয়েছে। এ বিষয়ে হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এর অর্থ ২০৩০ সালের মধ্যে চীনকে পরমাণু, বায়ু, সৌর ও অন্যান্য কার্বন নির্গমনমুক্ত উৎস ব্যবহার করে অতিরিক্ত ৮শ’ থেকে ১ হাজার গিগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন করতে হবে। বর্তমানে চীনের বিদ্যুত উৎপাদন ব্যবস্থা প্রধানত কয়লাকেন্দ্রিক। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পরিবেশবাদী গ্রুপ ন্যাচারাল রিসোর্স ডিফেন্স কাউন্সিলের প্রধান ফ্রান্সিস বেইনিকে বলেছেন, কার্বন নির্গমন হ্রাসে এ রকম একটি ঐতিহাসিক চুক্তিতে উপনীত হওয়া সময়ের দাবি ছিল। এ ব্যাপারে এখন দুদেশের সরকারকে যৌথভাবে কাজ করে যেতে হবে।
×