ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যাত্রা শুরু

সিলেট ফুটবল একাডেমির

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ১৩ নভেম্বর ২০১৪

সিলেট ফুটবল একাডেমির

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অনেক প্রতীক্ষা ও তিন বছর বিলম্বের পর অবশেষে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে সিলেট ফুটবল একাডেমি। বাফুফে সূত্রে জানা গেছে আজ বৃহস্পতিবার উদ্বোধন করা হবে সিলেটে নির্মিত বাংলাদেশের প্রথম ফুটবল একাডেমিটি। ২০১২ সালের ৬ মার্চ ফিফা সভাপতি সেপ ব্ল্যাটার ঢাকায় এসে বাফুফেকে একাডেমি তৈরি করতে সহায়তার নিশ্চয়তা দিয়ে যান। ফিফার তিন নম্বর ‘গোল প্রজেক্ট’-এর অধীনে বাফুফে পায় ছয় লাখ ডলার। এরপরও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) বরাদ্দ সঙ্কট, তাদের চরম অসহযোগিতা ও ধীরগতির কারণেই বার বার পিছিয়ে পড়ছিল সিলেট একাডেমি বাস্তবায়নের কাজ। বাফুফে সূত্রে জানা গেছে, একাডেমির অবকাঠামো তৈরি প্রায় শেষ। একাডেমির জন্য নির্বাচিত ৪০ ফুটবলার নিয়ে শুরু হচ্ছে একাডেমির কার্যক্রম। সোমবার তাদের নিয়ে সিলেটযাত্রা করেন বাফুফের চার কোচ আব্দুর রাজ্জাক, আবু রাহেল, সৈয়দ গোলাম জিলানী ও মাহবুব হোসেন রক্সি। এই ৪০ ফুটবলারের ২০ জন হচ্ছে অনুর্ধ-১৩ ও বাকি ২০ জন হচ্ছে অনুর্ধ-১৭ বয়সী। বাংলাদেশ জাতীয় দলের সহকারী কোচ রেনে কোস্টার চাকরি ছেড়ে চলে যাওয়ায় একাডেমির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে দেশীয় এই চার কোচের হাতে। ভবিষ্যতে আরও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বিদেশী কোচ আনার ইচ্ছা রয়েছে বাফুফের। একাডেমি উদ্বোধন করতে আজ সিলেট যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। আবার একই সময়ে ফিফার এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট কর্মকর্তা শাজি প্রভাকরণও বাংলাদেশে আসতে পারেন। উপস্থিত থাকবেন বাফুফে সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিনও। বাংলাদেশে বিশ্বমানের ফুটবলার তৈরির লক্ষ্যে ২০১২ সালের আগস্ট থেকে ফুটবলের নিজস্ব একাডেমি তৈরির কাজ শুরু করে বাফুফে। উল্লেখ্য, দেশের ৪ বিকেএসপির অন্যতম সিলেট সদর উপজেলার খাদিমপাড়া ইউনিয়নের দাসপাড়ায় ১৩ একর জমি নিয়ে প্রতিষ্ঠিত সিলেট বিকেএসপি। এখানে রয়েছে ২টি ফুটবল মাঠ, ১টি লন টেনিস কোর্ট, ১টি জিমনেশিয়াম, ১টি সুইমিংপুল ও ৪২ কক্ষবিশিষ্ট ১টি আবাসিক হল। সিলেট সদর উপজেলার খাদিমপাড়া ইউনিয়নে বাইপাস সড়কের পাশে অবস্থিত এটি। ইতোমধ্যে বাফুফে ফুটবল একাডেমির জন্য মাঠ খেলার উপযোগী করার জন্য সংস্কারমূলক কাজ শেষ হয়েছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সিলেট একাডেমির অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ২ কোটি টাকা বরাদ্দ করে। বাফুফের নির্দেশনা অনুযায়ী এ খরচ হবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মাধ্যমে। বিকেএসপির প্রশাসনিক ভবন, হোস্টেল, স্টাফ কোয়ার্টার, ডাইনিং, কিচেন, ২টি মাঠ, জিমনেশিয়াম ও সুইমিংপুল ব্যবহার উপযোগী করতেই মূলত এ অর্থ ব্যয় হয়। ২০১১ সালের ১৮ ডিসেম্বরে মাসিক ৫০ হাজার টাকা প্রদানের বিনিময়ে ৫ বছরের জন্য সিলেট বিকেএসপি হস্তান্তরের জন্য বিকেএসপির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় বাফুফে। তবে এমন এক সময় আসে যে, ১৪ মাসের ভাড়া বাবদ ৭ লাখ টাকা শোধ করতে পারেনি বাফুফে! এ সময়ের মধ্যে ফুটবল উপযোগী করে অবকাঠামো গড়ে তুলতে পারেনি তারা। বিকেএসপির সঙ্গে বাফুফের চুক্তির শর্ত ছিল, একাডেমিতে সংস্কার কাজের যাবতীয় খরচ বহন করবে বাফুফে। সরকার থেকে একটি টাকাও দেয়া হবে না। কিন্তু সেই শর্ত রাখা সম্ভব হয়নি। বাফুফে সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিন গত বছর আগে একবার বলেছিলেন, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) হচ্ছে একটি ক্ষতিকারক প্রতিষ্ঠান। দেশের খেলাধুলার উন্নয়নের পথে তারা বাধা স্বরূপ। তাঁর এই মন্তব্যকে এবার যথার্থভাবে সার্থক প্রমাণ করে এনএসসি! কিছুদিন চলার পর বন্ধ হয়ে যায় সিলেট একাডেমির সংস্কার কাজ। সংস্কারের জন্য বরাদ্দ এক কোটি ৯৫ লাখ টাকা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে ফেরত চলে যায়। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ নির্ধারিত সময়ে ব্যবহার করতে না পারায় এ টাকা ফেরত চলে যায়। তাই এক পর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায় একাডেমির সংস্কার কাজ। সে সময় ক্রীড়া পরিষদের সচিব শিবনাথ রায় নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে সাফাই গান এভাবে, ‘আগের সচিবের সময়ে টেন্ডার আহ্বানে অনেক সময় ব্যয় হয়। সংস্কারের নির্ধারিত সময়ে না হাওয়ায় টাকা ফেরত চলে গেছে।’
×