ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জার্মানির সর্বোচ্চ সম্মাননা পেল বিশ্বকাপজয়ী দল

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ১২ নভেম্বর ২০১৪

জার্মানির সর্বোচ্চ সম্মাননা পেল বিশ্বকাপজয়ী দল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বকাপ জয়ের স্বীকৃতি পেয়েছে জার্মান ফুটবল দল। গত জুলাইয়ে ব্রাজিল বিশ্বকাপ জয় করে ইউরোপের পাওয়ার হাউসরা। ১৯৯০ সালে দুই জার্মান একীভূত হওয়ার পর এটিই প্রথম শিরোপা জার্মানির। সবমিলিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চতুর্থ বিশ্বকাপ জয় করেছে জার্মানি। অসাধারণ এই সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশটির ক্রীড়াক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সম্মাননা পেয়েছেন বিশ্বকাপজয়ী জার্মান ফুটবলাররা। সোমবার জার্মানির রাষ্ট্রপতির সরকারী বাসভবনে জমকালো আয়োজনে বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়। জার্মান রাষ্ট্রপতি জোয়াকিম গোসেকের কাছ থেকে দেশটির ক্রীড়াক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সম্মাননা পুরস্কার গ্রহণ করেন ফিলিম লাম, মারিও গোয়েটজে, টমাস মুলার, মিরোসøাভ ক্লোসা, ম্যানুয়েল নিউয়েররা। রাষ্ট্রপতির সরকারী বাসভবন বেলেভ্যু প্যালেসে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় এই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির পাশাপাশি আরও উপস্থিত ছিলেন চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মার্কেল। অনুষ্ঠানে বিশ্বকাপজয়ী দলের প্রতিটি সদস্য, কোচ ও কর্মকর্তাকে ‘সিলভার লরেল লিফ’ উপহার হিসেবে দেয়া হয়। ঐতিহাসিক বার্লিন ওয়ালের ২৫তম বার্ষিকী উদ্যাপনের একদিন পর এই জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে জার্মান রাষ্ট্রপতি জোয়াকিম গোসেক বলেন, এটা ছিল দলের এমন অসাধারণ পারফর্মেন্স যা প্রতিপক্ষ প্রতিটি দলের কাছেই সমীহ লাভ করেছে। তিনি আরও বলেন, জার্মানির এটি চতুর্থ বিশ্বকাপ জয় হলেও একসঙ্গে অর্জিত এটাই প্রথম। ১৯৯০ সালে দুই জার্মান এক হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে সর্বশেষ পশ্চিম জার্মানি বিশ্বকাপ জয় করেছিল। বিশ্বকাপের পর জাতীয় দল থেকে অবসর নেন বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দেয়া ফিলিপ লাম। তিনি জার্মানির রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমি খেলোয়াড়দের পক্ষ থেকে আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। আপনারা আমাদের পাশে ছিলেন, যা দলকে উজ্জীবিত করেছিল। আশা করি সাফল্যের এই ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। উল্লেখ্য, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর দু’জনই বিশ্বকাপের সময় জার্মানির খেলা দেখতে ব্রাজিল গিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, ম্যাচ শেষে তারা জার্মানির ড্রেসিং রুমে গিয়ে খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানান। গত ১৩ জুলাই আরেকবার আর্জেন্টিনাকে কাঁদিয়ে বিশ্বজয়ের উল্লাস করে জার্মানি। রিও ডি জেনিরোর বিখ্যাত মারাকানা স্টেডিয়ামে ব্রাজিল বিশ্বকাপের ফাইনালে জার্মানরা ১-০ গোলে পরাজিত করে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনাকে। এই জয়ে আমেরিকা অঞ্চল থেকে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয় করেছে ইউরোপের কোন দেশ। ১৯৯০ সালে সর্বশেষ বিশ্বকাপ জয়ের পর দুই যুগের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে আবারও বিশ্বজয়ের মুকুট পরে জার্মানরা। এটি তাদের চতুর্থ বিশ্বকাপ শিরোপা। এর আগে ১৯৫৪, ১৯৭৪ ও ১৯৯০ সালে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে জার্মানি। সেমিফাইনাল আর ফাইনাল ট্র্যাজেডির দল বলা হয়ে থাকে জার্মানিকে। ফুটবলের যে কোন আসরে সবসময়ই ফেবারিটের তকমা থাকে তাঁদের গায়ে। ফাইনাল আর সেমিতে হারের লম্বা মিছিলে যোগ না দিলে জার্মানদের বিশ্ব ফুটবলের সেরা দল আপনাকে বলতেই হতো। সেক্ষেত্রে ব্রাজিলের আগে তাদের নামটিই উচ্চারণ করতে হতো বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। বিশ্বকাপের ইতিহাসেও জার্মানি সবচেয়ে ধারাবাহিক সাফল্য পাওয়া দল। ব্রাজিল বিশ্বকাপেও শেষ চারে পৌঁছে ইউরোপের পাওয়ার হাউসরা বিশ্বরেকর্ড গড়ে। কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সকে ১-০ গোলে হারিয়ে টানা চতুর্থবার সেমিফাইনাল খেলার রেকর্ড গড়ে জোয়াকিম লোর দল। প্রথম কোন দল হিসেবে নিজেদের গড়া ২০১০ সালের আসরে টানা হ্যাটট্রিক সেমিফাইনাল খেলার রেকর্ড ভাঙ্গে বর্তমান বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে ধারাবাহিক সাফল্য পাওয়া দলটি। এরপর সেমিফাইনালে স্বাগতিক ব্রাজিলকে ৭-১ গোলে নাস্তানাবুদ করে ফাইনালে পাড়ি জমান লাম, ক্লোস, মুলার, শোয়াইনস্টেইগাররা। এর ফলে ব্রাজিলকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে বেশি ৮ বার ফাইনালে খেলার রেকর্ড গড়ে জার্মানি। মারাকানায় চূড়ান্ত মহারণে ফের আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে বিশ্বকাপ ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চারবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরবে ভেসেছে জার্মানরা। এক্ষেত্রে তাদের সঙ্গী ইতালি। পাঁচটি শিরোপা জিতে সবার উপরে ব্রাজিল।
×