ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পরগাছা

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ১২ নভেম্বর ২০১৪

পরগাছা

দেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের ধারা এগিয়ে চলেছে। আওয়ামী লীগের শাসনে দেশে যেমন সর্বস্তরে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও দেশ তেমনই এগিয়ে চলেছে। বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ সংরক্ষণকে বর্তমান সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। ঠিক এমনই মুহূর্তে দেশে সুযোগসন্ধানী ও সুবিধাভোগী শতাধিক ‘পরগাছা সংগঠনের’ লক্ষ্য করা গেছে। পর্যবেক্ষক মহল এদের শাসক দলের ‘পরগাছা’ বলে অভিহিত করেছে। এরা সৎ ও দেশপ্রেমিক নয়, এরা সুবিধাভোগী লুটেরা শ্রেণীর প্রতিনিধি। সরকারের প্রভাব, প্রতিপত্তি ও জনপ্রিয়তাকে এরা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির কাজে লাগাচ্ছে। আওয়ামী লীগের বৈধ সহযোগী সংগঠন এরা নয়, বরং দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলটির পরগাছা হিসেবে অর্থ উপার্জনই এদের আসল লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোপূর্বে বহুবার এসব ভুয়া নেতা ও সংগঠনের বিষয়ে জনগণকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন। ১৯৭৫ সালে স্বাধীনতাবিরোধীদের হাতে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে শহীদ হওয়ার পর এদের অনেককেই খুঁজে পাওয়া যায়নি। এখন তারা অনুকূল সময়ে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে কিছু প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। এই নাম ব্যবহারের অধিকার এদের কে দিয়েছে? সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক বিষয়, শাসক দলের কিছু স্বল্পখ্যাত দ্বিতীয় সারির নেতা এদের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন। অবশ্য বিনা লাভে তারা কেউ এ ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন না। ‘পরগাছা’ সংগঠনগুলো যেসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করে, সেসব অনুষ্ঠানে এই ‘নেতৃবৃন্দ’ সভাপতি অথবা প্রধান অতিথি হিসেবে হাজির থাকার সুযোগ পাচ্ছেন। একইভাবে মূলধারার মিডিয়ার সঙ্গে জড়িত নয়, এমন কিছু সুবিধাবাদী সাংবাদিক ও ফটোগ্রাফার এসব অনুষ্ঠান প্রচারের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে। গোটা বিষয়টি এক ধরনের ধাপ্পাবাজি ছাড়া কিছুই নয়। কিন্তু ধাপ্পাবাজি করা হচ্ছে কাদের নিয়ে? শাসক দলের ‘পরগাছা’ এই সুযোগসন্ধানী সুবিধাভোগীরা প্রতারণা করছে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে। সুবিধাভোগী এই পরগাছাদের প্রতারণার ব্যবসা বন্ধে সম্ভাব্য সবই করা দরকার। বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা জাতির অমূল্য সম্পদ। তাঁদের নিয়ে গোপনে বা প্রকাশ্যে সব ধরনের চাঁদাবাজি অবিলম্বে বন্ধ করা জরুরী। এসব সংগঠনের নেতা ও তাদের কর্মকা- বিষয়ে যথাযথ তদন্ত দরকার। এদের কারণে সরকারের ভাবমূর্তি যাতে এতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেই লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। শাসক দল এসব বিষয়ে সচেতন হবে এটাই সবার প্রত্যাশা।
×