ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সম্পাদক সমীপে

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ১১ নভেম্বর ২০১৪

সম্পাদক সমীপে

মহান মুক্তিযোদ্ধা ৪৩ বৎসর পরও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা নিয়ে ভাবছে। বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) এতদিন যাবত বিভিন্ন চিঠিপত্র সারকোলার ও গঠনতন্ত্র মারফত মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা বিষয়ে নানা ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছে। যারা সক্রিয় সশস্ত্র সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছে তাঁরা সবাই মুক্তিযোদ্ধা। মোটামুটি এমন একটি ধারণা দেয়ার চেষ্টা হয়েছে। আসলে মুক্তিযুদ্ধটাই একটা বিশাল ব্যাপার। এখানে নানা জন নানা ভূমিকা পালন করে। যেমন একাত্তরে এদেশের প্রায় ৯৮% মানুষ মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে অবস্থান নেয় আর ০২% বিপক্ষে। এই ০২% লোকই রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও তথ্যকথিত শান্তি কমিটির গঠন করে হানাদার পাকবাহিনীকে সার্বিক সহযোগিতা করেছিল। আর বিশাল জনগোষ্ঠী বিভিন্নভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছে। কেউ আশ্রয় দিয়েছে, কেই খাবার দিয়েছে, কেউ পথ দেখিয়েছে, কেউ শত্রুবাহিনীর সংবাদ সংগ্রহ করেছে, কেউ অস্ত্র পরিবহনে সাহায্য করেছে। আবার কেউ বা মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা করেছে, কেউ বা যুদ্ধের গান গেয়ে সাহস যুগিয়েছে। এ রকম নানাভাবে তাঁরা সংশ্লিষ্ট ছিলেন। এক অর্থে তাঁরা সবাই মুক্তিযুদ্ধের অংশীদার, সংগঠক ও সাহায্যকারী কিন্তু তাই বলে কি ৯৮% মানুষকে মুক্তিযোদ্ধা বলা যাবে? মুক্তিযুদ্ধের পর ভারত ও বাংলাদেশেল সরকারী তথ্য মোতাবেক মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল প্রায় দেড় লক্ষাধিক। বিভিন্ন সরকারের আমলে ক্রমশ এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে যা কাক্সিক্ষত নয়। মুক্তিযোদ্ধার প্রসঙ্গটি এ রকম। প্রথমে প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে নাম তালিকাভুক্ত করার পর কমপক্ষে একমাস বেসিক ট্রেনিং দিতে হবে। এরপর উর্ধতন ক্যাম্পে অস্ত্রসহ গেরিলা প্রশিক্ষণ প্রায় এক মাস। অতঃপর কোম্পানি, প্লাটুন, সেকশন ইত্যাদির গঠন ও অস্ত্র বরাদ্দ। এরপর সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে অংশগ্রহণ। এভাবেই একাত্তরে প্রকৃত অর্থে মুক্তিযোদ্ধা তৈরি করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ ও যুদ্ধে অংশগ্রহণ ছাড়া কি মুক্তিযোদ্ধা হওয়া যায়? এতদিন পরে সংজ্ঞা খোঁজার প্রয়োজন আছে কি? মনোরঞ্জন রায় উলিপুর, কুড়িগ্রাম
×