ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিএনপির দুই নেতা বহিষ্কার, ৫ জনকে শোকজ

প্রকাশিত: ০৪:৫৬, ১১ নভেম্বর ২০১৪

বিএনপির দুই নেতা বহিষ্কার, ৫ জনকে শোকজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ছাত্রদলের নতুন কমিটির বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগে বিএনপি দুই নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে আরও ৫ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছে। বহিষ্কৃত দু’জনের সঙ্গে কোন প্রকার সাংগঠনিক যোগাযোগ না রাখার জন্যও বিএনপির সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সোমবার বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বহিষ্কৃত দু’জনের মধ্যে রয়েছেন ছাত্রদলের আগের কমিটির সহ-সভাপতি আবু সাঈদ এবং সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার। এ দু’জনকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত এ দু’জনের সঙ্গে কোন প্রকার সাংগঠনিক যোগাযোগ না রাখতে বলা হয়েছে। একই কারণে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হয়েছে ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি জাবেদ হাসান স্বাধীন ও তরুণ দে, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক তরিকুল ইসলাম টিটু ও ফেরদৌস আহমেদ মুন্না এবং সাবেকসহ সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রয়েলকে। এদের আজ মঙ্গলবার ৫টার মধ্যে পল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসে হাজির হয়ে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আনিসুর রহমান খোকন ও আবু সাঈদকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সংগঠন থেকে বহিষ্কৃত ওই দু’জন সাবেক ছাত্রনেতার সঙ্গে কোন ধরনের সাংগঠনিক যোগাযোগ বা সংশ্রব না রাখতে বিএনপি এবং এর সব অঙ্গসংগঠনের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বহিষ্কৃত ও নোটিস পাওয়া এসব নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে ছাত্রদলের নতুন কমিটির বিরুদ্ধে যে বিক্ষোভ শুরু হয় তার নেতৃত্বে ছিলেন তাঁরা। পদবঞ্চিতদের পক্ষ হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের সঙ্গে বৈঠকেও অংশ নিয়েছিলেন। ছাত্রদলের নতুন কমিটির পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভ নিরসনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তখন এসব বিক্ষোভকারীদের হাতে লাঞ্ছিত হন বিএনপি মহাসচিব। জানা গেছে, গত রবিবার রাতে ছাত্রদলের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নির্দেশে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৈঠকে বসেন। চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ের ওই বৈঠকে অংশ নেন বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সহ-ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, ছাত্রদল সভাপতি রাজিব আহসান, সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার। বৈঠকে যে কোন মূল্যে সংগঠনের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। খালেদা জিয়া গত ১৪ অক্টোবর রাজিব আহসান ও আকরামুল হাসানের নেতৃত্বে ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠন করেন। কমিটি গঠনের পর থেকে পদবঞ্চিতরা বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা বিএনপির পল্টন অফিসে গিয়ে ভাঙচুর চালায়। কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে স্থাপিত জিয়াউর রহমানের ম্যুরালও নষ্ট করা হয়। ছাত্রদলের অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয় তারা। বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে তা নিরসনের দায়িত্ব দেয়া হয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে। কিন্তু বারবার বৈঠক করেও ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে কোন নিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি তিনি। এছাড়া পদবঞ্চিতদের নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসও কয়েকবার বৈঠক করেন। জানা গেছে, বৈঠকে কারণে ছাত্রদলের পদবঞ্চিতরা তাদের বিক্ষোভ সাময়িক স্থগিত করলে এ বিষয়ে এখনও কোন সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি। গত ৭ নবেম্বর শুক্রবার বিএনপির বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন উপলক্ষে খালেদা জিয়ার শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিতে যাওয়ার পথে বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর গাড়িতে হামলা ও ভাংচুর চালায় ছাত্রদলের পদবঞ্চিতরা। এ অবস্থার মধ্য দিয়েই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে ছাত্রদলের সাবেক দু’জন নেতাকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃতদের সঙ্গে কোন প্রকার সাংগঠনিক যোগাযোগ না রাখতেও বিএনপির সব সংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সংগঠনবিরোধী কর্মকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগে ছাত্রদল বর্তমান কমিটি থেকেও ১ জন নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দু’জনের বিরুদ্ধে দেয়া হয়েছে কারণ দর্শানোর নোটিস। ছাত্রদলের দফতর থেকে জানানো হয়েছে বর্তমান কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক গাজী রেজওয়ানুল হক রিয়াজকে সংগঠনবিরোধী কর্মকা-ের অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে নাহিদ ও বাবুর বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছে।
×