ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পুঁজিবাজারে বড় ধরনের দরপতন

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১০ নভেম্বর ২০১৪

পুঁজিবাজারে বড় ধরনের দরপতন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিনিয়োগকারীদের মনস্তাত্ত্বিক চাপের কারণে পুঁজিবাজারে সূচকের বড় ধরনের পতন ঘটেছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার হরতালের মতো কর্মসূচী বাড়ার মধ্য ঢাকা স্টক এক্সেচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) লেনদেন বাড়লেও বেশিরভাগ কোম্পানির দর কমেছে। এছাড়া সম্প্রতি নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর দর তুলনামূলকহারে বেড়েছে বেশি। যেগুলো সূচকের গণনায় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে না। ফলে দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ৮৬ পয়েন্ট। আর সিএসইর সিএসসিএক্স কমেছে ১১৩ পয়েন্ট। উভয় বাজারেই সব ধরনের সূচক কমেছে প্রায় ২ শতাংশের বেশি। বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, রবিবার দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে সূচকের উর্ধমুখী প্রবণতার মধ্য দিয়ে শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত আর এ অবস্থা দেখা যায়নি। দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক কমে বিনিয়োগকারীদের মনস্তাত্ত্বিক সীমা ৫ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে এসেছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লেনদেন শুরু হওয়ার এক ঘণ্টা পর সূচক কমাতে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়তে থাকে। বিপরীতে নতুন শেয়ারের প্রতি আস্থা বেড়ে যায় তাদের। ফলে লেনদেন বাড়লেও সূচকের পতন ঘটে। ভাল মৌলভিত্তিসম্পন্ন শেয়ার বিক্রি করে দ্রুত মুনাফার লোভে নতুন শেয়ারের পেছনে ছুটে চলাকেও দায়ী করছেন অনেকেই। তাঁদের মতে, বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ দ্রুত মুনাফা ঘরে তুলতে নতুন ও জাঙ্ক শেয়ারের প্রতি অস্বাভাবিক চাহিদা দেখাচ্ছেন। যা ঠিক নয়। সাময়িকভাবে এতে মুনাফা বাড়লেও দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগকারীদের লোকসানে ফেলতে পারে বলেও শেয়ার বিশ্লেষকরা মনে করছেন। অন্যদিকে কৌশলী বিনিয়োগকারীদের বড় একটি অংশ মনে করছেন, ডিএসইর সার্বিক সূচকটি ৫ হাজার পয়েন্টের নিচে নামলে ৪ হাজার ৮০০ পয়েন্ট পর্যন্ত নামতে পারে। কারণ তার আগে কোন সাপোর্ট পাবে না বাজার। সব মিলে দিনশেষে সূচক কমেছে বলে মনে করেন তাঁরা। দেখা গেছে, ডিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৮৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৯৩৮ পয়েন্টে। ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ২২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে এক হাজার ১৫৭ পয়েন্টে। আর ডিএস৩০ সূচক ৫১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৮১৫ পয়েন্টে। এদিন ডিএসইতে মোট লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩০৬টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১১২টি কোম্পানির আর দর কমেছে ১৫৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৮টির। এছাড়া ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের শেয়ার। এরপরে রয়েছে কেয়া কসমেটিকস লিমিটেড, এ্যাপোলো ইস্পাত কমপ্লেক্স, ডেসকো, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, রংপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস, সাইফ পাওয়ারটেক, খুলনা প্রিন্টিং এ্যান্ড প্যাকেজিং, শাহজিবাজার পাওয়ার, বিবিএস। ডিএসইতে দর বৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো : ন্যাশনাল পলিমার, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, লিগাসি ফুটওয়ার, হোটেল পেনিনসুলা চট্টগ্রাম, সিনো বাংলা, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, কেয়া কসমেটিকস, খুলনা প্রিন্টিং এ্যান্ড প্যাকেজিং, শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড ও এ্যাপোলো ইস্পাত। দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো : আরএসআরএম স্টিল মিল, ফারইস্ট নিটিং এ্যান্ড ডাইং, মাইডাস ফাইনান্স, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, প্রগ্রেসিভ লাইফ, জেমিনি সী ফুড, বিআইএফসি, প্রাইম লাইফ, বরকতউল্লাহ ইলেক্ট্রো ডায়নামিকস ও তিতাস গ্যাস। অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও সব ধরনের সূচক পতন হয়েছে। এদিন সিএসইতে ৬৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। রবিবার সিএসই সার্বিক সূচক সিএসইসিএক্স ১১৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৯ হাজার ৩২৯ পয়েন্টে। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২২৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৭৩টির, কমেছে ১৩৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টির। সিএসইর লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো: ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, পেনিনসুলা চট্টগ্রাম, এ্যাপোলো ইস্পাত, সাইফ পাওয়ার টেক, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, খুলনা প্রিন্টিং এ্যান্ড প্যাকেজিং, কেয়া কসমেটিকস, বেক্সিমকো, জিবিবি পাওয়ার ও আরএসআরএম স্টিল।
×