ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সোভিয়েতকে বিদায় দিয়ে এখন রাশিয়ামুখী হাঙ্গেরি

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৯ নভেম্বর ২০১৪

সোভিয়েতকে বিদায় দিয়ে এখন রাশিয়ামুখী হাঙ্গেরি

সিকি শতাব্দী আগের কথা। হাঙ্গেরিতে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যার ফলশ্রুতিতে শেষ পর্যন্ত সমাজতন্ত্রের পতন ঘটে। ঘটনাগুলোর নেপথ্য নায়ক ছিলেন ২৬ বছর বয়সী লম্বা চুল বিশিষ্ট আইনের স্নাতক ভিক্টর ওরবান। তিনি এখন তৃতীয়বারের মতো দেশটির প্রধানমন্ত্রীর পদে আছেন। ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমস। সময়টা ছিল ১৯৮৯ সালের জুন মাস। ওরবান একটি বিশেষ স্মরণ অনুষ্ঠানে যোগ সোভিয়েতবিরোধী আন্দোলন উস্কে দিয়েছিলেন। ১৯৫৬ সালে মস্কোর বিরুদ্ধে বুদাপেস্টের ব্যর্থ বিদ্রোহের উপলক্ষে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে ওরবান তার দেশ থেকে ৮০ হাজার সোভিয়েত সৈন্য প্রত্যাহার ও অবাধ নির্বাচন আয়োজনের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান। এর পাঁচ মাস পর বার্লিন প্রাচীরের পতন ঘটে। রবিবার বার্লিন প্রাচীর পতনের ২৫তম বার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে। এমন এক সময় এই উদযাপন হচ্ছে যখন ওরবান হাঙ্গেরিতে তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায়। হাঙ্গেরি এখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা ন্যাটোর সদস্য। ২৫ বছর আগে ওরবান যে আদর্শের স্বপ্ন দেখিয়ে রাজনৈতিক ধারা বদলে দিয়ে ছিলেন, এত বছর পরে এসে দেখা যাচ্ছে তিনি প্রায় উল্টো পথে হাঁটছেন। পশ্চিমা গণতান্ত্রিক পুঁজিবাদী ধারা অনুসরণ করবেন প্রথমদিকে এরকম আশা জাগালেও তিনি এখন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের উত্তরসূরী রাশিয়ার সঙ্গে সখ্যতা বাড়িয়ে চলেছেন। অবস্থা দৃষ্টে ধারণা পাওয়া যায়, ওরবান এখন পুতিনের পথেই হাঁটছেন। হাঙ্গেরিতে এখন মুষ্টিমেয়ের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পুতিন এবং ওরবান উভয়ই এখন ইউরোপের পশ্চিমাকরণের বিপক্ষে কাজ করছেন। উভয়ের শাসন ব্যবস্থার মধ্যে একনায়কসুলভ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। ওরবানের দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দলটি বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর তিনি ক্রমান্বয়ে নিজের কাছে কেন্দ্রীভূত করেছেন। তবে জনগণের সব দাবি তিনি একেবারে উপেক্ষা করেন তা নয়। ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে তিনি সম্প্রতি ইন্টারনেটের ওপর কর আরোপের একটি সরকারী পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। সাবেক জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসকা ফিশ্চার ওরবানের সরকারকে ইইউর মধ্যে একমাত্র পুতিনপন্থী সরকার হিসাবে অভিহিত করেছেন।
×