ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পুঁজিবাজারে প্রকৌশল ও জ্বালানি খাতের প্রাধান্য

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ৯ নভেম্বর ২০১৪

পুঁজিবাজারে প্রকৌশল ও জ্বালানি খাতের প্রাধান্য

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গেল সপ্তাহে প্রকৌশল ও বিদ্যুত-জ্বালানি খাতের কোম্পানির দিকে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বরাবরই ছিল। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪৭ শতাংশ ছিল এ দুই খাতে। এতে লেনদেনে নেতৃত্বে ছিল এ খাত দুটি। প্রকৌশল খাতের নতুন কোম্পানি ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপ-ইয়ার্ডের লেনদেন শুরু এবং জ্বালানি খাতের প্রতি ঝুঁকি আগের তুলনায় বেড়েছে। তবে এর মাঝেও গত সপ্তাহে ডিএসইর সব ধরনের সূচকই কমেছে। সার্বিকভাবে গত সপ্তাহে ডিএসইর সার্বিক সূচক কমেছে ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ। অন্যদিকে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২ দশমিক ৬৬ শতাংশ। বাজার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি বছরের এরই মধ্যে বাজারে ১৫ কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে। তালিকাভুক্ত হওয়া এসব কোম্পানির মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত শেয়ার হচ্ছে শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি। কোম্পানিটি তালিকাভুক্তির কয়েক দিন পরই অনির্দিষ্টকালের লেনদেন স্থগিতাদেশের মধ্যে পড়ে। অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ নিয়ে জটিলতা ও কোম্পানির অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন বিশেষ নিরীক্ষার জন্য প্রায় আড়াই মাস পর লেনদেন স্থগিত করা হয়। তবে পুনরায় লেনদেন চালু হলেও শেয়ারটির চাহিদা বৃদ্ধির কারণে মাত্র আট কার্যদিবসে দ্বিগুণ দর বাড়ে। অব্যাহত চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে সর্বোচ্চ দরেও একপর্যায়ে বিক্রেতা নেই এ শেয়ারের। বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, টাকার অঙ্কে গেল সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বিদ্যুত-জ্বালানি খাতে। এ খাতে মোট ৬৭১ কোটি ৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে; যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ২৪ শতাংশ। এছাড়া প্রকৌশল খাতে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৬৩০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ২৩ শতাংশ। পাশাপাশি ওষুধ খাতে ৪০৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়, যা ছিল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৪ শতাংশ। মোট লেনদেনের ৬১ শতাংশই ছিল এ খাতের। অন্যদিকে গেল সপ্তাহে সবচেয়ে বাজার মূলধন বেড়েছে সেবা-আবাসন খাতে ১৭ দশমিক ২৪ শতাংশ। এ খাতে নতুন হিসেবে সামিট এ্যালায়েন্স পোর্ট ও সাইফ পাওয়ারটেকের দর বৃদ্ধিতে খাতটির বাজার মূলধন বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে। সামিট এ্যালায়েন্সের শেয়ারে গেল সপ্তাহে বেড়েছে ২৪ দশমিক ৬২ শতাংশ ও সাইফ পাওয়াটেকের দর বেড়েছে ১৬ দশমিক ১২ শতাংশ। এছাড়া প্রকৌশল খাতের বাজার মূলধন বেড়েছে ৮ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। এ খাতে ওয়েস্টার্ন মেরিন তালিকাভুক্তিতে এ খাতের উর্ধমুখী প্রবণতা তৈরি করেছে। গেল সপ্তাহে এ শেয়ারটির দর বাড়ে প্রায় ৩১ শতাংশ। অন্যদিকে গেল সপ্তাহে দর হারিয়েছে সিমেন্ট খাত ৬ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ, ব্যাংকিং খাত ২ দশমিক ১৪ শতাংশ, ওষুধ খাত ২ দশমিক ৭৬ শতাংশ ও টেলিযোগাযোগ খাত ৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ। ডিএসইতে গেল সপ্তাহে ৩১৩ কোম্পানির মোট ৬২ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ১৫১ সিকিউরিটিজের লেনদেনে হয়, যার বাজার দর ছিল ২৭৭৭ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে কমেছে ২১৮টির, বেড়েছে ৭৫টির ও অপরিবর্তিত ছিল ২০টির। ডিএসইর সার্বিক আগের সপ্তাহে ১৪৮ দশমিক ১৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ২৫ দশমিক ১ পয়েন্টে। অন্যদিকে নির্বাচিত সূচক ডিএসই-৩০ আগের দিনের চেয়ে ৮২ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ২৩ পয়েন্টে। একইভাবে অন্য বাজার সিএসইতে গত সপ্তাহে ২৫২ কোম্পানির মোট ৫ কোটি ৬৮ লাখ ৯০ হাজার ৫৯৭ সিকিউরিটিজের লেনদেন হয়; যার বাজার দর ছিল ২৩৬ কোটি ৫২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর কমেছে ১৭৯টির, বেড়েছে ৫৯টির ও অপরিবর্তিত ছিল ১৪টির। সিএসইর সার্বিক সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ২৫৮ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৯৪৪২ দশমিক ৮১ পয়েন্টে। অন্যদিকে নির্বাচিত সূচক ৪৩৫ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১২৬৮৮ দশমিক ৩৯ পয়েন্টে। ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলো হলো : ওয়েস্টার্ন মেরিন, খুলনা পাওয়ার, কেয়া কসমেটিকস, সাইফ পাওয়ারটেক, গ্রামীণফোন, সামিট এ্যালায়েন্স পোর্ট, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস, স্কয়ার ফার্মা, খুলনা প্রিন্টিং ও এমজেএল বাংলাদেশ। ডিএসইতে গেল সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি দরবৃদ্ধির তালিকায় থাকা কোম্পানিগুলো হলো : আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, সামিট এ্যালায়েন্স পোর্ট, কাশেম ড্রাইসেল, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, সাইফ পাওয়ারটেক, বিডি থাই এ্যালুমিনিয়াম, দেশবন্ধু পলিমার, বিচ হ্যাচারি, ওরিয়ন ইনফিউশন ও ফার্স্ট আইসিবি মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে দর হ্রাসের তালিকায় থাকা কোম্পানিগুলো হলো : ফাইন ফুডস, ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স, আল-হাজ টেক্সটাইল, অগ্নি সিস্টেমস, তুং হাই নিটিং, মেট্রো স্পিনিং, সমতা লেদার, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল, সিভিও পেট্রো কেমিক্যাল ও দেশ গার্মেন্টস।
×