ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

টাইগারদের লক্ষ্য এবার হোয়াইটওয়াশ

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ৯ নভেম্বর ২০১৪

টাইগারদের লক্ষ্য এবার হোয়াইটওয়াশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বেশিদিন হয়নি, কয়েক মাস আগেও আফগানিস্তানের মতো ক্রিকেটের উঠতি শক্তিকে দেখেও হাঁটু কেঁপেছে বাংলাদেশ দলের। এমন নাজুক পরিস্থিতির কারণটা দীর্ঘদিন পরাজয়ের বৃত্তে আটকে পড়া। তবে সেই বৃত্তটা অবশেষে ভেঙ্গেছে বাংলাদেশ দল, টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিরুদ্ধেই জয় তুলে নিয়েছে। যে টেস্ট ক্রিকেটে বরাবরই বাংলাদেশের পদচারণাটা এক ভ্রান্তি এমনটা বলেই টিপ্পনী কেটেছেন। কিন্তু সেদিনের শেষ হয়ে গেল মনে হয়। আবার নিজেদের ফিরে পেয়েছে টাইগাররা। টানা দুই টেস্টে র‌্যাঙ্কিংয়ে নিজেদের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে থাকা জিম্বাবুইয়েকে হারিয়েছে বাংলাদেশ দল। তিন টেস্টের সিরিজ আগেভাগেই জয় নিশ্চিত হয়ে গেছে। এবার মুশফিকবাহিনীর স্বপ্ন হোয়াইটওয়াশের। যা বাংলাওয়াশ নামেই সমধিক পরিচিত। সে জন্য সবচেয়ে পয়মন্ত ভেন্যু সাগরিকায় কোণঠাসা জিম্বাবুইয়েকে পাচ্ছে বাংলাদেশ। যে সাগরিকাতেই একই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে নিজেদের প্রথম টেস্ট জয়ের স্বাদ নিয়েছিল বাংলাদেশ দল। সেবার এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে খেলা হলেও এবার হবে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। এর আগে ২০০৩ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এবং ২০০৭ সালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তিন টেস্টের সিরিজ খেলেছিল বাংলাদেশ দল। উভয় সিরিজেই হোয়াইটওয়াশের লজ্জা জুটেছিল। সেই দুটি সিরিজ বাংলাদেশ প্রতিপক্ষের মাঠে খেলেছে। এইবার তৃতীয়বারের মতো তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ আর পাল্টে যাওয়া ছকে উল্টো প্রতিপক্ষকেই বাগে পেয়ে গেছে বাংলাদেশ দল। তৃতীয়বারের মতো সিরিজ জয় হয়ে গেছে। এবার দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করার সুযোগ। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দুই টেস্টের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে ফিরেছিল গর্বিত বাংলাদেশ। তারপর আর কোন সিরিজ জেতা হয়নি এবং এই ৫ বছরে একটিমাত্র টেস্ট জিততে পেরেছে বাংলাদেশ দল। গত বছর জিম্বাবুইয়ে সফরে সেই একটি জয় এসেছিল। সে কারণে টেস্ট মর্যাদা নিয়েই প্রশ্নটা উঠতে শুরু করেছিল। তাই এ সিরিজ জয় ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ র‌্যাঙ্কিংয়ের তলানিতে থাকলে সহযোগী দেশগুলোর সঙ্গে খেলতে হবে ইন্টার কন্টিনেন্টাল কাপে চারদিনের ম্যাচ। সেখান থেকে জিতে আসতে পারলেই পাওয়া যেত টেস্ট খেলার সুযোগ। এখন সাগরিকায় বাংলাদেশ দল হেরে গেলেও রেটিংয়ে দুই এগিয়ে থাকবে জিম্বাবুইয়ের চেয়ে আর ড্র করলে ব্যবধানটা হবে ৯। নিশ্চিত হয়ে গেছে সিরিজ শেষেই আইসিসির র‌্যাঙ্কিং রিভিউ করলে ১০ নম্বর থেকে এক ধাপ উঠে বাংলাদেশ চলে আসবে ৯ নম্বরে। মূলত স্পিন বোলিংয়েই পার্থক্য তৈরি করবে দু’দলের সেটা নিশ্চিতই ছিল। কারণ ওয়ানডে ক্রিকেটে জিম্বাবুুইয়ের চেয়ে পরিসংখ্যানে এগিয়ে গেলেও টেস্ট ক্রিকেটে এখনও বাংলাদেশই পিছিয়ে। সিরিজ শুরুর আগে দু’দলের ১১ ম্যাচে ৬ বার জিম্বাবুইয়ে আর মাত্র ২ বার বাংলাদেশের জয়। তবে বাংলাদেশী স্পিনাররা দুই টেস্টে ভয়ানক বোলিং করে জিম্বাবুইয়েকে ডুবিয়েছেন। দুই টেস্টেই বাংলাদেশী স্পিনাররা নিয়েছেন ১৮ উইকেট। তাই এবার পরিসংখ্যানে জিম্বাবুইয়ের সঙ্গে ব্যবধানরটা আরও কমিয়ে আনার সুবর্ণ সুযোগ। যদিও জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে ১২ টেস্ট খেলে ৮টিতেই হেরেছে স্বাগতিকরা। চারটি ম্যাচ করতে পেরেছে ড্র। এর মধ্যে অবশ্য এখনও জিম্বাবুইয়ে জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে খেলেনি। আর ২০০৫ সালে প্রথম পরাজয়ের তিক্ত স্মৃতি এবং চলমান সিরিজে টানা হার চট্টগ্রামের মাটিতে পা দিতেই শিউরে তুলবে সফরকারীদের। আর উজ্জীবিত বাংলাদেশ দল সাঁড়াশির মতো চেপে বসবে জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে।
×