ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তের বছর পর ‘জোড়া শতক’ জিম্বাবুইয়ের

প্রকাশিত: ০৫:২০, ৭ নভেম্বর ২০১৪

তের বছর পর ‘জোড়া শতক’ জিম্বাবুইয়ের

স্পোর্টস রিপোর্টার, খুলনা থেকে ॥ বাংলাদেশের বিপক্ষেই শেষ, আবার বাংলাদেশের বিপক্ষেই শুরু। ২০০১ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে এক ইনিংসে যে একাধিক শতক পেয়েছিল জিম্বাবুইয়ে, আর সেই কীর্তি দেখাতে পারেনি। সেখানেই যেন এমন কৃতিত্বের শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু প্রায় ১৩ বছর পর আবারও জিম্বাবুইয়ে যেন জেগে উঠল। আবার যেন পুরনো যুগেরও শুরু হয়ে গেল। মাসাকাদজা ও চাকাবভার মাধ্যমে জোড়া শতকেরও দেখা পেয়ে গেল। সেই বাংলাদেশের বিপক্ষেই। এক, দুই, তিন বছরও নয়; এক এক করে ১২ বছর পার হয়ে গেছে। টেস্টে এক ইনিংসে একাধিক শতকের দেখা পায়নি জিম্বাবুইয়ে। অবশেষে ১৩ বছর শেষ হতে যখন কিছুদিন বাকি, এমন সময় গিয়ে ‘জোড়া শতকে’র দেখা পেল জিম্বাবুইয়ে। বাংলাদেশের বিপক্ষে খুলনা টেস্টের প্রথম ইনিংসে হ্যামিল্টন মাসাকাদজার পর শতক করলেন রেগিস চাকাবভাও। মাসাকাদজা ৩২৬ বলে ১৫৮ রান করলেন। আর চাকাবভার ব্যাট থেকে আসে ২২৬ বলে ১০১ রান। ২০০১ সালের নবেম্বরের পর থেকে যা জিম্বাবুইয়ের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে বিরলই হয়ে উঠেছিল। তাই বলাই যায়, প্রায় ১৩ বছর পর জোড়া শতকের দেখা পেল জিম্বাবুইয়ে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ২০০১ সালে সর্বশেষ এক ইনিংসে জোড়া শতক নয়, জিম্বাবুইয়ের তিন শতক হয়েছিল। প্রথম ইনিংসেই ৩টি শতক হয়। ট্রেভর গ্রিপার (১১২), এন্ডি ফ্লাওয়ার (১১৪*) ও ক্রেইগ উইসার্ট (১১৪) শতকগুলো করেন। সেই ম্যাচটিও হয়েছিল বাংলাদেশের মাটিতেই। প্রতিপক্ষ বাংলাদেশই। এক যুগ পর যখন আবার জিম্বাবুইয়ে সেই একাধিক শতকের দেখা পেল, তখনও প্রতিপক্ষ বাংলাদেশই। সেই জিম্বাবুইয়ে ও বাংলাদেশ দলের কোন ক্রিকেটারই এখন অবশ্য দলে নেই। সেই শতকগুলো বাংলাদেশকে হারিয়ে দিয়েছিল। এবার কী হবে? জিম্বাবুইয়ে ২০০১ সালের আগে এক ইনিংসে ‘জোড়া শতকে’র দেখা পেয়েছে তিনটি। কিন্তু এরপর আর সেই শতক পাওয়া উধাও হয়ে যায়। ২০০০ সালের নবেম্বরে নাগপুরে ভারতের বিপক্ষে (দ্বিতীয় ইনিংসে এ্যালিস্টার ক্যাম্পবেল ১০২ ও এন্ডি ফ্লাওয়ার ২৩২* রান), ১৯৯৮ সালের মার্চে পাকিস্তানের বিপক্ষে বুলাওয়েতে (দ্বিতীয় ইনিংসেÑ মুরে গুডউইন ১৬৬* ও এন্ডি ফ্লাওয়ার ১০০*), ১৯৯৫ সালের জানুয়ারিতে হারারাতে পাকিস্তানের বিপক্ষে (প্রথম ইনিংসেÑ গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ার ২০১*, এন্ডি ফ্লাওয়ার ১৫৬ ও গাই হুইসেল ১১৩*) এক ইনিংসে একাধিক শতক আসে জিম্বাবুইয়ের। এরপর মাসাকাদজা ও চাকাবভার সৌজন্যে বৃহস্পতিবার চতুর্থবারের মতো এক ইনিংসে একাধিক শতকের দেখা পায় জিম্বাবুইয়ে। অবশ্য এর মাঝে জিম্বাবুইয়ে প্রায় ৬ বছর টেস্ট ক্রিকেট থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসনে ছিল। অর্থাৎ ৬ বছর বাদ দিলে ৭ বছর পর এক ইনিংসে একাধিক শতক পেল জিম্বাবুইয়ে ধরে নেয়া যায়। মাসাকাদজা আগেরদিনই শতক পূরণ করে ফেলেছিলেন। জিম্বাবুইয়ের হাল ধরেছিলেন। এগিয়ে যেতে যেতে দেড় শ’ রানও করে ফেলেন। ডাবল শতক করার আশা জাগিয়েছিলেন। ক্যারিয়ারে এ নিয়ে ৪টি শতক করেছেন এ ব্যাটসম্যান। তিনটিই বাংলাদেশের বিপক্ষে। একের পর এক ‘নতুন জীবন’ পেয়ে ১০৬ বলে গিয়ে অর্ধশতক করেন। ২০৫ বলে গিয়ে করেন শতকও। তৃতীয় দিন শেষে ১৫৪ রানে থাকেন অপরাজিত। তার সঙ্গে চাকাবভাও ৭৫ রান করে চতুর্থদিনে ব্যাট হাতে নামার অপেক্ষায় থাকেন। ক্যারিয়ারের প্রথম শতক করার অপেক্ষাতেও থাকেন। মাসাকাদজার ডাবল শতক করার আশা পূরণ হয়নি। আর ৪ রান যোগ হতেই আউট হয়ে যান মাসাকাদজা। দিনের শুরুতেই সাকিবের তাকে সাজঘরে ফেরান। তবে চাকাবভা ঠিকই স্বপ্ন পূরণ করেন। ২২১ বলে গিয়ে শতক করেন। আর ১ রান যোগ করতেই চাকাবভাও আউট হয়ে যান। তবে আউট হওয়ার আগেই জিম্বাবুইয়েকে প্রায় ১৩ বছর পর এক ইনিংসে ‘জোড়া শতক’ পাওয়ার আনন্দ পেয়ে দেন। তাইজুলের অফ সাইডের বাইরের বলটি ব্যাটের ছোঁয়া লাগিয়ে গালি ও স্কয়ারের ফাঁক দিয়ে গেপ বের করে ১ রান নেন। চাকাবভার শতক হতেই জিম্বাবুইয়েও সেই অধরা ‘জোড়া শতকে’ ভাসে।
×