ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শাস্তি মওকুফÑ হকিতে এবার পালা জিমিদের

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ৬ নভেম্বর ২০১৪

শাস্তি মওকুফÑ হকিতে এবার পালা জিমিদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একজনের শাস্তি মওকুফ হয়েছে। বাকি আছে তিনজন। এবার তাদের শাস্তিও মওকুফ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন। শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে শাস্তি পাওয়া জাতীয় দলের তিন খেলোয়াড়Ñ জাহিদ হোসেন, ইমরান হাসান পিন্টু ও রাসেল মাহমুদ জিমির শাস্তি মওকুফ হতে যাচ্ছে। ফেডারেশনের একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে তাদের শাস্তি মওকুফের সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। এখন শুধু আনুষ্ঠানিকতা বাকি। সেই আনুষ্ঠানিকতা হতে পারত বুধবারই ফেডারেশনের গবর্নিংবডির (জিবি) সভায়। কিন্তু হরতালের কারণে সেই সভা পিছিয়ে গেছে। খুব শীঘ্রই, হয়ত এ সপ্তাহেই সভাটি অনুষ্ঠিত হবে এবং তাতে ওই তিন খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে শাস্তির নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়া হবে। গত বছর সেপ্টেম্বরে মালয়েশিয়ার ইপোতে এশিয়া কাপে ব্যর্থতার জন্য চার খেলোয়াড়ের দেশাত্মবোধ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ৪ নবেম্বর জিবি মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জিমি, জাহিদ ও পিন্টুকে তিন বছরের জন্য জাতীয় দল এবং দু’মৌসুমের জন্য সব ধরনের ঘরোয়া হকির কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করা হয়। আর রানাকে দু’বছরের জন্য জাতীয় দলের পাশাপাশি এক বছরের জন্য সব ধরনের ঘরোয়া হকির কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করা হয়। পরে অভিজ্ঞ এ খেলোয়াড়দের ছাড়াই জাতীয় দল গঠন করে চ্যালেঞ্জ নেয় হকি ফেডারেশন। গত এক বছরে অনেকটা ভালমন্দের মিশেলেই দেখা গেছে জাতীয় হকি দলের পারফর্মেন্স। এ বছর ঢাকার মাঠে এশিয়ান গেমস বাছাইপর্ব এবং ওয়ার্ল্ড হকি লীগের প্রথম পর্বে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। তবে ইনচনে এশিয়ান গেমসের মূল আসরে একের পর এক হারে আগের সেই অষ্টম স্থানে থেকেই দেশে ফেরেন চয়ন-মিমোরা। এছাড়া চুক্তি শেষ হওয়ায় এরই মধ্যে দেশে ফিরে গেছেন পাকিস্তানী কোচ নাভিদ আলম। অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের শাস্তি মওকুফ করে ফের তাঁদের খেলায় ফিরিয়ে আনার দাবি উঠেছিল অনেকদিন ধরে। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবার নিষেধাজ্ঞার ঘেরাটোপ থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছেন তাঁরা। শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কৃত এই খেলোয়াড়রা প্রায় দুই মাস আগে ফেডারেশনের কাছে ক্ষমা চেয়ে চিঠি দেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে ক্ষমা পেয়েছেন রানা। জাহিদ হোসেন বহিষ্কার আদেশের পর খেলার বাইরে থাকায় জীবিকার তাগিদে বেছে নিতে হয়েছে ভিন্ন পথ। ঢাকার অদূরে সাভারের বাইপাইলে জুতোর ব্যবসা করছেন তিনি। আরেক তারকা খেলোয়াড় রাসেল মাহমুদ জিমি নিউমার্কেটে একটি কাপড়ের দোকান চালাচ্ছেন। আরেক বহিষ্কৃত খেলোয়াড় ইমরান হাসান পিন্টু কাটাচ্ছেন বেকার সময়। নিজের ভাগ্নে-ভাগ্নিদের নিয়ে আর বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডাই এখন তাঁর একমাত্র কাজ। মাঝে অবশ্য স্নাতক পরীক্ষা নিয়ে কিছুটা ব্যস্ত ছিলেন তিনি। কিন্তু তারপর আবারও বেকার জীবনের হতাশাই বয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফেডারেশনের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা চাই হকির উন্নয়ন। যে কারণে তাদের শাস্তি মাফ করার সিদ্ধান্ত মোটামুটি নিশ্চিত। তবে তারা ভবিষ্যতে এ ধরনের কোন কর্মকা- আর করবেন না, সে বিষয়ে স্ট্যাম্প পেপারে সই করেই দলে ফিরবেন।’ ওয়ার্ল্ড হকি লীগকে সামনে রেখে ভারতীয় কোচ অজয় বানসালকে তিন মাসের জন্য নিয়োগ দেয়ার কথা থাকলেও এখনও তাঁর বর্তমান কর্মস্থল থেকে ছুটি না পাওয়াতে তাঁর ঢাকায় আসা অনিশ্চিত। তবে তিনি না আসলে তাঁর পরিবর্তে কাকে দায়িত্ব দেয়া হবে, সে বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি ফেডারেশন। তবে ডিসেম্বরে আবারও ঢাকায় আসবেন ইন্টারন্যাশনাল হকি ফেডারেশনের (আইএইচ এফ) নিয়োগ দেয়া বেলজিক কোচ মিশেল কিনান। এর আগেও তিনি বাংলাদেশ জাতীয় দলের দায়িত্ব পালন করেছেন। বছরে চারবার ১৫ দিন করে বাংলাদেশ জাতীয় দলের উপদেষ্টা কোচের দায়িত্ব পালনের জন্য তাঁকে নিয়োগ দেয় আইএইচএফ। আইএইচএফ থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া হকির টার্ফটি ঢাকার কমলাপুরের আইসিডিতে অবস্থিত কন্টেইনারে একমাস ধরে রাখা আছে। যে কারণে ফেডারেশনকে একমাসে গুনতে হয়েছে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা। জানা গেছে, বিভিন্ন আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় টার্ফটি আটকে আছে। এছাড়া মাওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে ফেডারেশনের কয়েকটি টুর্নামেন্ট এখনও বাকি আছে। ১৫ ডিসেম্বর আইএএইচএফের প্রেসিডেন্ট লিয়েন্ড্রো নেগ্রে আবার ঢাকায় আসবেন। তিনি আসার পরই কাজ শুরু হবে। সবমিলিয়ে ডিসেম্বরের ২০ তারিখের আগে টার্ফ বসানোর কাজে হয়ত হাত দেয়া সম্ভব হবে না।
×