ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শিশু একাডেমিতে ‘জলরং’ কর্মশালা উদ্বোধন

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ৬ নভেম্বর ২০১৪

শিশু একাডেমিতে ‘জলরং’ কর্মশালা উদ্বোধন

সংস্কৃতি সংবাদ স্টাফ রিপোর্টার ॥ আমাদের দেশে ছবি আঁকার প্রধান মাধ্যম জল রং। ছবি আঁকার এ মাধ্যমকে আরও বেগবান ও এর চর্চাকে প্রসারিত করার লক্ষ্যে জাতীয়ভাবে চতুর্থবারের মতো এক কর্মশালার আয়োজন করেছে জলের ধারা এ্যাসোসিয়েশন। ১২ দিনব্যাপী এ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের তরুণ প্রতিভাবানরা। রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশের বিশেষ লোকেশনে উন্মুক্ত জায়গায় আয়োজিত এ কর্মশালায় প্রশিক্ষণ দেবেন দেশের বরেণ্য জল রং শিল্পীরা। বাংলাদেশ শিশু একাডেমির লেকচার থিয়েটার রুমে বুধবার দুপুরে ১২ দিনব্যাপী এ কর্মশালার উদ্বোধন করেন শিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আর ও উপস্থিত ছিলেন শিল্পী হামিদুজ্জামান খান, অলকেশ ঘোষ, বীরেন সোম, জলের ধারা এ্যাসোসিয়েশনের শিল্পীসহ দেশের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শিক্ষার্থী। উদিয়মান শিল্পী শাহানুর মামুনের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। আমন্ত্রিত অতিথীরা বলেন, জল রং মাধ্যমটি আমাদের দেশে ছবি আঁকার প্রধান একটি মাধ্যম। শিল্প গুরু জয়নুল আবেদীনের প্রিয় মাধ্যম ছিল এটি। বর্তমানে এই মাধ্যমের চর্চা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেতে শুরু করেছে। সে পরিপ্রেক্ষিতে ছবি আঁকার এ মাধ্যমটিকে আরও বেগবান ও প্রসারিত করার লক্ষ্যে, জলের ধারা সংগঠন থেকে জাতীয়ভাবে এ কর্মশালার আয়োজন যথার্থ। তরুণ প্রতিভাবানরা শিল্প চর্চাকে এগিয়ে নিয়ে আরও সমৃদ্ধশালী একটি দেশ গড়বে এটাই সবার প্রত্যাশা। স্বপ্ন একদিন মানুষকে সার্থকতার শিখরে নিয়ে যায়। তরুণদের সে স্বপ্ন থাকা উচিত যা তাকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে নিয়ে যেতে পারে। জলের ধারা যেমন কোনদিন থেমে থাকে না, তেমনি শিল্প চর্চার উজ্জ্বল ক্ষেত্র জলের ধারা সংগঠনটিও কোন দিন যেন থেমে না থাকে, আমরা সবাই সে প্রত্যাশাও করি। সীমিত সময়ের এ কর্মশালার মাধ্যমে বড় রকমের কোন শিল্পী তৈরি করা হয়ত সম্ভব নয়, কিন্তু এর মাধ্যমে শিল্প চর্চার আলোকিত দ্বার উন্মোচন করা সম্ভব। প্রকৃতির সঙ্গে মিশে থাকা এ জল রং নিয়ে নতুন যারা কাজ করবে তাদের ভেতর শিল্পের চেতনাও তদ্রুপ প্রসারিত হবে। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শিল্পী আজমীর হোসেন, আনিসুর রহমান, সুমন সরকার, কামাল উদ্দিন ও আইভি জামান খান। অনুষ্ঠানে আরও জানানো হয়, কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের আঁকা নির্বাচিত ছবি নিয়ে এক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেছে ঢাকা চারুকলা, রাজশাহী চারুকলা, চট্টগ্রাম চারুকলা, ঢাকা আর্ট কলেজ, খুলনা চারুকলা, ইউডা চারুকলা, নারায়ণগঞ্জ চারুকলা, শান্তা মারিয়াম চারুকলা, সিলেট চারুকলা, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিশাল ময়মনসিংহ চারুকলা, জগন্নাথ চারুকলা, বুলবুল ললিতকলা একাডেমি, ইডেন মহিলা কলেজ ও সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। ১২ দিনব্যাপী এ কর্মশালায় প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন বরেণ্যশিল্পী হামিদুজ্জামান খান, অলকেশ ঘোষ, বীরেন সোম, আনিসুর রহমান, কামাল উদ্দিন, সোহাগ পারভেজ ও শাহানুর মামুন। কর্মশালার স্থান নির্ধারণ করা হয়েছেÑ রমনা পার্ক, কার্জন হল, ধানম-ি লেক, সোয়ারিঘাট, সদরঘাট, চিড়িয়াখানা, আমিনবাজার, শীতলক্ষ্য ও সোনার গাঁ। কবি রবীন্দ্র গোপের জন্মদিন উদ্যাপন ॥ স্মৃতিচারণ আর ফুলেল শুভেচ্ছায় কবি রবীন্দ্র গোপের ৬৩তম জন্মদিন উদ্যাপন করা হয় বুধবার। জাতীয় গণগ্রন্থাগারের সম্মেলন কক্ষে সন্ধ্যায় জন্মদিনের বর্ণাঢ্য এ আয়োজন করে রবীন্দ্রগোপ জন্মোৎসব পরিষদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বরেণ্য গীতিকার শহীদুল্লাহ্ ফরায়জী। আলোচনায় অংশ নেন-কবি মিজান পাটোয়ারী, কবি আসলাম সানী, কবি আয়াত আলী পাটোয়ারী, শিশু সাহিত্যিক রোকনুজ্জামান দাদু ভাই, কবি লিলি হক, চিত্রশিল্পী আহাদ সরকার প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে কবি রবীন্দ্র গোপের ‘জয়বাংলার গান’ কবিতা আবৃত্তি করেন ড. শাহাদৎ হোসেন নিপু। এরপর কবিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন শুভানুধায়ীরা। বক্তারা বলেন, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে তেজদীপ্ত কবিতা পাঠের মধ্যদিয়েই কবি রবীন্দ্র গোপের কবিতাঙ্গনে যাত্রা শুরু। বৈপ্লবিক চেতনায় ভাস্বর এ কবি লেখার জন্য জীবনে বহুবার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। কবিতাকে ভালবেসে জীবনের ভালবাসা থেকে বঞ্চিত একজন মানুষ। সত্যকে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি এক শব্দ সৈনিক। রাজনৈতিক চক্রজালে নির্মম অত্যাচারে চাকরিচ্যুত হয়েছেন। সত্যকথা অকপটে বলার সাহস তাঁর সব সময়। এ সত্যকে তিনি তুলে ধরার চেষ্টা করেন তাঁর লেখনীতে। কবি রবীন্দ্র গোপোর জন্ম ১৯৫১ সালের ৫ নবেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অরুয়াইলের জয়নগরে। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা অর্ধশতাধিক। তিনি কথাশিল্পী সাহিত্য পুরস্কার-স্বর্ণপদকসহ বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। বর্তমানে সোনার গাঁও লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক।
×