ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘গণতন্ত্রের ওড়না পরে বেগম জিয়া সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের রানী’

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৬ নভেম্বর ২০১৪

‘গণতন্ত্রের ওড়না পরে বেগম জিয়া সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের রানী’

ভারতের পত্রপত্রিকায় তথ্যমন্ত্রী ইনুর বক্তব্যের ফলাও প্রচার তপন বিশ্বাস ॥ আর্থিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারলে বাংলাদেশ-ভারতে গজিয়ে ওঠা জঙ্গীবাদ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব বলে মনে করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। মঙ্গলবার জনকণ্ঠকে দেয়া একান্ত সাক্ষাতকারে তিনি একথা বলেন। এর আগে এ প্রসঙ্গে রবিবার তিনি ভারতের কথা বলেন, যা সেদেশের বিভিন্ন পত্রিকা প্রকাশ করেছে। ইনু বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সীমানাপার’ চরিত্র জামায়াতী জঙ্গীবাদীদের বেপরোয়া করে তুলেছে। তারা এক দেশে অপরাধ করে অন্য দেশে আত্মগোপন করে থাকে। এর পাশাপাশি আইএসআইর সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ এবং আফগানিস্তানে তালেবানের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তালেবানের কাছ থেকে ৭/৮ হাজার জঙ্গী প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরে এসেছে। মধ্যপ্রাচ্যের কিছু সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গেও তারা যোগাযোগ রাখছে। সেখান থেকে বিপুল অর্থ ও অস্ত্র আসছে এই জঙ্গীবাদের মদদ হিসেবে। এদের এই সকল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে পারলে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদ অনেকটা নির্মূল করা সম্ভব। বাংলাদেশে এই জঙ্গীবাদের উত্থান বেগম জিয়ার মদদে হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় বেগম জিয়া ছিলেন জামায়াত ও জঙ্গীবাদের পৃষ্ঠপোষক। বাংলার মাটি ছিল জামায়াত ও জঙ্গীদের অভয়ারণ্য। বেগম জিয়া রাজাকার, যুদ্ধাপরাধীদের এবং গজিয়ে ওঠা জঙ্গীবাদকে বেড়ে উঠতে রাষ্ট্রীয়ভাবে সহযোগিতা করেছিলেন। তাদের সমর্থন দিয়েছেন। যারা রাজাকারদের সমর্থন দেয় তারাও রাজাকার। সে হিসেবে বেগম জিয়া হলেন নব্য রাজাকার। যতক্ষণ তিনি রাজাকারদের সমর্থন দেবেন ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি রাজাকার। এরা ‘৭১ এর বাংলাদেশ, বাংলাদেশের ইতিহাস, ধর্ম ও গণতন্ত্রের বিরোধিতা করেছে। সঠিক ইতিহাস বিকৃত ও ধর্মের অপব্যবহার ও ধর্মের অপব্যাখ্যা করে এরা রাজনৈতিক ফায়দা লুটেছে। রাজনৈতিকভাবে এদের সমর্থন করে খালেদা জিয়া বাংলাদেশকে কলুষিত করেছেন। তিনি বলেন, এই গজিয়ে ওঠা জঙ্গীবাদকে হালকাভাবে দেখা উচিত হবে না। এদের মোকাবেলা করতে আন্তর্জাতিক সর্ম্পক ছিন্ন করতে হবে। সে কাজে বাংলাদেশ সরকার, পশ্চিমবঙ্গের মমতা সরকার, ভারতের কেন্দ্রে মোদি সরকার ও সীমান্তবর্তী অন্যান্য রাজ্য সরকারকে একযোগে কাজ করতে হবে। এ লক্ষ্যে অবিলম্বে যৌথ কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া দরকার। আর্থিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারলে এদের নিয়ন্ত্রণ করা অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে বেগম জিয়াকে উদ্দেশ করে ইনু বলেন, খালেদা জিয়ার সামনে দু’টি রাস্তা রয়েছে। হয় তিনি জামায়াত, জঙ্গীবাদ ও যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গ ত্যাগ করবেন, না হলে জঙ্গীবাদ দমনের পাশাপাশি খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে বিদায়ের ব্যবস্থা করবে দেশের জনগণ। আধুনিককালের এই নব্য রাজাকার খালেদা জিয়ার সঙ্গে গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে কোন সংলাপ বা সমঝোতার জায়গা নেই। রাজাকারের সঙ্গ বাদ না দেয়া পর্যন্ত কোন অবস্থায় বেগম জিয়ার সঙ্গে নির্বাচন বা অন্য কোন ইস্যুতে সংলাপের সুযোগ নেই। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘হয় খালেদা জিয়া ’৭১ এর রাজাকার, গজিয়ে ওঠা জঙ্গীবাদ ’৭৫-এর খুনী এবং ২১ আগস্টের খুনীদের বর্জন এবং ত্যাগ করবেন, আর না হয় রাজনীতির মঞ্চ থেকে বিদায় হবেন। বাংলাদেশের সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখতে এই রাজনৈতিক পদক্ষেপ ছাড়া উপায় নেই।’ ইনু বলেন, কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী নিজামীর রায়ের পর নীরবতার মধ্য দিয়ে নিজামীর পক্ষ অবলম্বন করে মহান স্বাধীনতার বিরোধিতা করে উনি (খালেদা জিয়া) আরও একবার ’৭১ রাজাকারের পক্ষ নিলেন এবং জামায়াতী ও সন্ত্রাসবাদী তৎপরতাকে উৎসাহিত করলেন এবং উস্কে দিলেন। খালেদা জিয়া আসলে বদলাননি। কার্যত ওনি নব্য রাজাকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। ওনার হাতে বাংলাদেশের সংবিধান, গণতন্ত্র, সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং ইসলামসহ কোন ধর্মই নিরাপদ নয়। উনি গণতন্ত্রের ওড়না পরে কার্যত সন্ত্রাসের ও জঙ্গীবাদের রানী। দেশবাসীকে তার কথায় বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী।
×