ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নাটোরে জনসভা ছিল ব্যানার ফেস্টুনে ভরা, লোক সমাগম কম

খালেদা বললেন প্রধানমন্ত্রীর মাথায় গ-গোল

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ২ নভেম্বর ২০১৪

খালেদা বললেন প্রধানমন্ত্রীর মাথায় গ-গোল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিজেদের অপকর্মের জন্য বর্তমান সরকার শুধু দেশে নয় সারা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেন, এ সরকারকে বিদায় করতে সময়মতো আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আরেকবার আন্দোলনে শরিক হোন। আমার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার শখ নেই। আমি আন্দোলন করি গণতন্ত্র, ভোটের অধিকার ও জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য। দেশে হিটলারী শাসন চলছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘নব্য হিটলার’ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, মানুষ বলে শেখ হাসিনা স্বৈরাচার, আমি বলব তিনি নব্য হিটলারের মতো র‌্যাব-পুলিশ ব্যবহার করে মানুষ হত্যা করছেন। তাই জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নেই। এভাবে দেশ চলতে পারে না। চলতে দেয়া যায় না। দেশকে সন্ত্রাসমুক্ত করতে আসুন এই হিটলারকে বিদায় করি। তিনি বলেন, আমি জনগণের জন্য কাজ করতে চাই, আন্দোলন করি জনগণের জন্য, আমার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার শখ নেই। শনিবার বিকেলে নাটোর এনএস কলেজ মাঠে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ২০ দলীয় জোট আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। খালেদা জিয়া বলেন, শেখ হাসিনার সরকার লুট, ধর্ষণ, উস্কানি ও সহায়তা, পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার আটটি ঘটনায় জামায়াতে ইসলামীর আমির নিজামীকে দোষী সাব্যস্ত করে এর চারটির জন্য তাকে মৃত্যুদ- দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। অন্য চারটিতে তাকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন আল-বদর বাহিনীর প্রধান নিজামীর বিরুদ্ধে বুধবার এই রায় ঘোষণার পর সারা দেশে তিন দিনের হরতাল ডেকেছে জামায়াতে ইসলামী, যার প্রথম দিন গেছে বৃহস্পতিবার। আগামী রবি ও সোমবারও তাদের হরতালের ঘোষণা রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে ক্যাডম্যান বলেন, “একটি বিশ্বস্ত সূত্রে গোপন যোগাযোগের তথ্য পাওয়া গেছে, যাতে বিচার বিভাগ, প্রসিকিউশন ও সরকারের সদস্যদের সঙ্গে যোগসাজশের প্রমাণ মিলেছে। “সরকারের লোকজনকে প্রত্যক্ষভাবে বিচার প্রক্রিয়ার ওপর প্রভাব খাটাতে দেখা গেছে এবং বিচারে প্রভাব খাটিয়ে রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর প্রতিহিংসা চরিতার্থের অভিযোগ রয়েছে।” বিচার প্রক্রিয়ায় ট্রাইব্যুনালের বিচারকরা আন্তর্জাতিক আইনের মূলনীতি মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে দাবি করেন টবি ক্যাডম্যান। ট্রাইব্যুনালে আসামিপক্ষের সাক্ষীর সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। জামায়াতের এই বিদেশী আইনজীবী বলেন “কোনো গ্রহণযোগ্য প্রমাণ ছাড়াই একটি আধা সামরিক বাহিনী (আল-বদর) গঠনের জন্য নিজামীকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন ট্রাইব্যুনালের বিচারকরা।” নিজের দাবির পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, আল-বদর বাহিনী গঠনের চার মাস আগেই ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতির পদ ছেড়েছিলেন নিজামী। সাক্ষীদের ওপর সরকারের প্রভাব খাটানোর অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “সরকারের সদস্যদের অনুরোধে একজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছেন বলে অখন্ডনযোগ্য প্রমাণ উপস্থাপন করেছিলেন আসামিপক্ষ।” ট্রাইব্যুনালে আইনের লঙ্ঘন হচ্ছে দাবি করে তা ঠেকাতে সোচ্চার হওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান ক্যাডম্যান। বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অবিলম্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ও ট্রাইব্যুনাল-২ এর সব বিচার কার্যক্রম স্থগিত, এ পর্যন্ত দেয়া সব দন্ড স্থগিত এবং অন্যান্য দেশে এ ধরনের ট্রাইব্যুনালে কাজের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে পরামর্শ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি। যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিলের রায় নিয়েও প্রশ্ন তুলে তা পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন জানানোর সুযোগ দাবি করেছিলেন জামায়াতের আন্তর্জাতিক লবিস্ট ক্যাডম্যান। এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের’ অভিযোগ করেছিলেন তিনি। গত বছরের রাজনৈতিক সহিংসতায় হতাহতের ঘটনায় সরকারের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য ছিল তার আবেদন।
×