ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আইএস শাসনে চরম দুর্দশায় মসুলবাসী

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ২৯ অক্টোবর ২০১৪

আইএস শাসনে চরম দুর্দশায় মসুলবাসী

খাদ্য পানীয়ের চরম সঙ্কট ॥ কাজ করছে না কোন সরকারী প্রতিষ্ঠান ইসলামিক স্টেট আইএস জঙ্গীদের শাসনে ইরাকী শহর মসুলের জনসাধারণ অর্থনৈতিক দুর্দশা ও নির্যাতন সহ্য করে চলেছে যখন ইরাকী সেনাবাহিনী ইসলামিক স্টেটের হামলার মুখে পালিয়ে যায়, তখন অনেক সুন্নী খুশিই হয়েছিলেন, কিন্তু অনেকের কাছে এখন পরিস্থিতি অনেক বেশি শোচনীয়। খবর গার্ডিয়ান অনলাইনের। আইএস শাসিত সবচেয়ে বড় শহর মসুলের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটেছে বলে বাসিন্দারা জানাচ্ছেন। সেখানে খাদ্য ও পানির অভাব প্রকট, কোন সরকারী প্রতিষ্ঠান কাজ করছে না এবং স্থানীয় অর্র্থনীতি একবারেই ভেঙ্গে পড়ার মুখে। শহরের বাসিন্দারা বিভিন্ন সাক্ষাতকারে আইএস শাসনাধীনে জীবনধারা সম্পর্কে এক হতাশাজনক ছবিই তুলে ধরে। পাঁচ বছর আগে জঙ্গীদের হাতে পতিত ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঐ শহরে অসন্তোষ ক্রমশ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। অধিকাংশ সরকারী প্রতিষ্ঠানেই কাজ কর্ম বন্ধ হয়ে গেছে এবং সরকারী অর্থ সাহায্যে পরিকল্পিত নির্মাণ প্রকল্পগুলো স্থগিত রাখা হয়েছে। হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। আইএসএর সর্বশেষ সংবাদপত্রে স্বীকার করে যে, কোন রাষ্ট্র মুসলিমদের ‘পার্থিব ও ধর্মীয় উভয় প্রয়োজন’ মেটানো না পর্যন্ত প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারে না। দলটি এর নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাগুলোতে বেসামরিক লোকজনের যতœ নিচ্ছে বলে উল্লেখ করে। এর ইংরেজী সাময়িকী দাবিকে বৃদ্ধদের জন্য আইএস পরিচালিত আশ্রয় নিবাস, রাস্তায় রাস্তায় পরিচ্ছন্ন কর্মীদের কাজ করা এবং এক ক্যান্সার ক্লিনিকে এক চিকিৎসকের একটি শিশুর সেবা করার ছবি দেখান হয়। কিন্তু মসুলের বাসিন্দারা বলছেন, বাস্তব পরিস্থিতি আইএসের প্রচারণা থেকে একেবারেই ভিন্ন। তারা বলছেন, আগামী শীতের মোকাবেলা করার মতো পোশাক পরিচ্ছদ স্থানীয় লোকজনের নেই। অনেকেই তাদের সঞ্চিত অর্থ ব্যয় করে ফেলেছে এবং এখন তাদের কোন উপার্জন নেই। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম দ্রুত বেড়ে গেছে। রাস্তা-ঘাটের আবর্জনা অপসারণ করা হয়নি। ৩৪ বছরের নির্মাণ শ্রমিক জিয়াদ গার্ডিয়ানকে বলেন, তিনি বেশিরভাগ সময় বাসায় বসেই কাটান। তিনি তার পরিবারের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বিগ্ন আছেন। কোন কাজ নেই যা কিছু কাজই পাওয়া যায় মালিকরা খুব কম মজুরি দেন। যখন গ্রীষ্মকালে আইএস মসুল দখল করেছিল, তখন অনেক সুন্নী ইরাকী সেনা ও পুলিশ বাহিনী হটে যাওয়ায় খুশিই হয়েছিলেন। প্রধানত সুন্নীরাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী নূরী আল-মালিকির সাম্প্রদায়িক নীতির বৈষ্যম্যের শিকার পরিণত হয়ে ছিলেন। আর মূলত শিয়াদের নিয়ে গঠিত ঐসব বাহিনী সুন্নী-প্রধান মসুলের জনসাধারকে ক্ষেপিয়ে তুলেছিল। এখন স্থানীয়রা সিদ্ধান্ত পৌঁছেলেন যে, তারা ইতোপূর্বে যা সহ্য করেছিলেন, আইএসের শাসন তার চেয়ে আরও খারাপ না হলেও ভাল তো নয়ই। তারা দু’মাস আগে মসুল ত্যাগ করেন এবং এখন কুর্দি অঞ্চল সুলাইমানিয়াতে বাস করেন।
×